ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে তিন ম্যাচ ওয়ানডে ক্রিকেট সিরিজের শেষ খেলায় আয়ারল্যান্ডকে ৪ রানে হারালো বাংলাদশে। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটি।  তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ২৭৪ রানের পুঁজি নিয়ে দারুণ বোলিংয়ে ৪ রানের জয় পায় টাইগাররা।

রোববার (১৪ মে) ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সব কয়টি উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তামিমের সঙ্গে ওয়ানডেতে প্রথমবারের মত ওপেনিংয়ে নেমে ক্রিজে থিতুই হতে পারেননি রনি তালুকদার। পরপর ১২ ডট বল খেলে ১৩তম বলে চাপে পড়ে আগ্রাসী মেজাজেই বাউন্ডারি হাঁকান অভিষিক্ত এ ওপেনার। তবে পরের বলেই মার্ক এডেয়ারের বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন এ ব্যাটার।

তিনে নাজমুল হোসেন শান্ত, চারে লিটন দাস ও মিডল-অর্ডারে মুশফিকুর ও মেহেদী মিরাজরা ভালোই শুরু করেছিলেন। তবে তাদের কেউই বড় স্কোরের দিকে অগ্রসর হতে পারেননি। কেবল তামিমই ফিফটির দেখা পান, আর উইকেট ছেড়ে এসে সেঞ্চুরির সুযোগ মিস করে ৬ বাউন্ডারিতে ৬৯ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন দেশসেরা এই ওপেনার।

রনির অভিষেক ব্যর্থতায় শান্ত ও লিটনকে নিয়ে যথাক্রমে ৪৯ ও ৭০ রানের জুটি গড়েন তামিম। তবে তাদের বিদায়ে বাকি দুই মিডল-অর্ডার তাওহিদ কিংবা মুশফিকুরের সঙ্গে খুব একটা কেমিস্ট্রি জমেনি অধিনায়কের। আর টাইগারদের কাপ্তান ফেরার পরপরই বড় স্কোরের পথে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ।

যদিও ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে আশা জাগিয়েছিলেন মুশফিক ও মিরাজ। এই জুটির অবদান ৭৫ রান। এরপর জুটি ভাঙলে আর কেউই ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতেই ২৭৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগার শিবির।

আইরিশদের হয়ে মার্ক এডেয়ার চারটি, জর্জ ডকরেল ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন দুটি করে এবং ক্রেইগ ইয়াং একটি উইকেট শিকার করেছেন। আর ৯ ওভারে ৬৫ রান খরচায় উইকেট শূন্যই ছিলেন আইপিএলে আইরিশদের একমাত্র প্রতিনিধি জশ লিটল।

২৭৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। স্টিভেন ডোহেনিকে হারানোর পর দারুণ জুটি গড়েছেন পল স্টার্লিং ও অ্যান্ড্রু বালবার্নি। তবে টাইগারদের আগ্রসী বোলিংয়ে দ্রুত এ দুই জনকে হারিয়ে চাপে পরে আইরিশরা।

২৭৪ রানের পুঁজি নিয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিং শুরু করে টাইগাররা। আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষা নিতে থাকে। প্রথম ৫ ওভারে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি আইরিশ ব্যাটাররা। লেগ বাই থেকে এসেছে শুধু একটি চার। তবে শুরু থেকে আঁটসাঁট বোল করা মুস্তাফিজ- সাফল্য পেলেন ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে।

তার করা ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে  অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন ডোহেনি। ১৬ বলে করেন ৪ রান আয়ারল্যান্ডের ওপেনার। ফলে ১৭ রানে ভাঙল উদ্বোধনী জুটি।

এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি। তাকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন পল স্টার্লিং। টাইগার বোলারদের সুযোগ না দিয়ে রানের গতি বাড়াতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৫৮ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন স্টার্লিং। স্টার্লিংয়ের পর ৭১ বলে ফিফটি পূরণ করেন বালবির্নি।

তবে বালবির্নি অর্ধশতক করে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেনি উইকেটে। দলীয় ১২৬ রানে ইবাদতের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই আইরিশ অধিনায়ক। ৭৮ বলে করেন ৫৩ রান। এরপর উইকেটে বেশিক্ষন থাকতে পারেনি বালবির্নিকে সঙ্গ দেওয়া স্টার্লিংও। তৃতীয় জুটিতে ২০ রান তুলতেই-দলীয় ১৪৬ রানে ফেরেন এই ব্যাটার। ৭৩ বলে করেন ৬০ রান।