মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে সীমান্তের শূন্য রেখায় প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করেছে। এসব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমাওে ফেরত পাঠাতে চীনের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (২০শে অক্টোবর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আজ বৃহস্পতিবার চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মূলত রোহিঙ্গা নিয়ে আলাপ হয়েছে। চীনকে বলেছি, সম্প্রতি আমাদের সীমান্তের শূন্য রেখায় প্রায় ৫ হাজারের মতো রোহিঙ্গা আছে। আমরা বলেছি, ওদের মিয়ানমারের ভেতরে নিয়ে যাও। কারণ এগুলো এখানে থাকলে আমাদের একটা ভয় থাকে। ওদের শূন্য রেখায় রাখা যাবে না।

সীমান্ত ইস্যু নিয়ে চীনকে জানানোর পর পরিস্থিতি ভালো হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে প্রায়ই বোমা আসছিল। আমাদের বর্ডার এলাকার লোক আতঙ্কে ছিল। আমরা সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি। পরে আমরা চীনের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি। চীনকে বলার পর বোমাবাজি কমে গেছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়ে চীন আবারও অঙ্গীকার করেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনারা যে ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিয়েছেন সেটা দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমাদের অনুরোধের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তিনি সুখবর দেবেন। কিন্তু তিনি প্রকৃত অর্থে কোনো ধরনের সুখবর কিছু দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন যে, তারা এখনও এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছেন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য। আপাতত আমাদের কাছে মনে হচ্ছে চীনের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য এটাই সুখবর।

আগের চুক্তিতেই মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে রাজি আছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগের যে চুক্তি হয়েছে সে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নিতে রাজি আছে মিয়ানমার। তারা (মিয়ানমার) বলেছে, তারা (মিয়ানমার) ভেরিফিকেশনের পরে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তারা এখনও বলছে, আমরা ওদের নিরাপত্তা দিতে রাজি। রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যাতে রোহিঙ্গারা সেখানে স্বেচ্ছায় যেতে পারে।

তবে পূর্ব অভিজ্ঞতায় মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে কতটা আন্তরিক হবে সেটা নিয়েও শঙ্কা মোমেনের। তিনি বলেন, এতদিন ধরে যে অবস্থা, মনে হয় না তাদের সে আগ্রহ আছে। এর আগে দুবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি।

পরপর দুই বার ব্যর্থ বাংলাদেশ এখন আর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দিন তারিখ জনসম্মুখে প্রকাশ করতে চায় না বলেও জানান মন্ত্রী।