আজ ২০শে জানুয়ারি শহীদ আসাদ দিবস। ১৯৬৯ সালের এদিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্রনেতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তার এই আত্মত্যাগ স্বৈরশাসনবিরোধী চলমান আন্দোলনকে বেগবান করে। পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন হয় স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এটি তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

১৯৬৯ সালের ২০শে জানুয়ারি পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে বাঙালি ছাত্রদের ১১ দফা কর্মসূচির মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে জীবন দেন ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আসাদুজ্জামান। আসাদ শহীদ হওয়ার পর তিন দিনের শোক পালন শেষে ওই বছরের ২৪শে জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ছয় দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার নামে ঢাকাসহ সারা বাংলার রাজপথে। সংঘটিত হয় উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান। পতন ঘটে আইয়ুব খানের। আরেক স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় বসে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন।

সত্তর সালের সেই অভূতপূর্ব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু ইয়াহিয়া ক্ষমতা না ছাড়াতে নানা টালবাহানা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় একাত্তর সালে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী শহীদ আসাদ এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের মাঝে চির জাগরুক থাকবেন। তার আত্মত্যাগ ভবিষ্যতেও আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে পথ দেখাবে।

তিনি আরও বলেন, ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে শহীদ আসাদের আত্মত্যাগ আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সব শ্রেণি পেশার মানুষ জেল-জুলুম উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে।  সে দিনের সেই আন্দোলন পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে শহীদ আসাদসহ আত্মোৎসর্গকারী সব শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ২০শে জানুয়ারি একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। আসাদের এই আত্মত্যাগ চলমান আন্দোলনকে বেগবান করে। পরবর্তীকালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন হয় স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।