যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যারিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়ার ২৩টি সংগঠন। ডিসি একুশে এলায়েন্সের (ডিসিইএ) উদ্যোগে ‘বাংলাদেশি এমেরিকান আইটি প্রফেশনাল অর্গানাইজেশন (বাইটপোর) ব্যবস্থাপনায় এবং আর্লিংটন আর্টস ও আর্লিংটন কাউন্টির সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অস্থায়ী শহীদ মিনারে। এসময় দূতাবাসের মিনিস্টার হাবিবুর রহমান ও কাউন্সিলর আরিফা রহমান রুমাসহ কর্মকর্তাবৃন্দ ছিলেন। এছাড়া ইউএস সিনেটর মার্ক ওয়ার্কার প্রতিনিধি, আটলান্টিক কাউন্টির প্রধান কেটি ক্রিস্টলসহ মূলধারার নেতৃবৃন্দ সম্মানিত অতিথি হিসেবে থেকে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন ডিসি একুশে এলায়েন্সের (ডিসিইএ) এর সমন্বয়ক সামছুদ্দীন মাহমুদ।

প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত শহীদুল বলেন, ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যারিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়ার ২৩টি সংগঠন সম্মিলিতভাবে অনুষ্ঠানটি করে প্রমাণ করেছে তারা প্রবাসে থাকলেও দেশের প্রতি তথা নিজের ভাষার প্রতি তাদের সম্পর্ক অত্যন্ত প্রবল। তিনি বাংলা ভাষাকে প্রবাস প্রজন্মে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এমন প্রয়াসের সাথে বাংলাদেশ দূতাবাস সবসময় কাজ করবে বলে আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক সামছুদ্দীন মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলি যেখানে বাংলা ভাষাভাষী অনেক লোক রয়েছে, সেখানে বাংলাকে কোনো মর্যাদাই দেওয়া হয়নি। দাপ্তরিক কোন কাজে বাংলার কোন ব্যবহার কোথাও নাই, ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাভাষী মানুষজন অনেক অসুবিধার মধ্যে দিনাতিপাত করতে হয়। এমতাবস্থায় বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার জন্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সকল স্থানে যেখানে বাংলা ভাষাভাষী লোকজন রয়েছে সেখানে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা করার জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

একুশ আমাদের চেতনা, একুশ আমাদের অহংকার- এই প্রতিপাদ্যে এবার ডিসি, ভার্জিনিয়া ও ম্যারিল্যান্ডের ২৩টি সংগঠন সম্মিলিতভাবে এই উদযাপন করেছে। সংগঠনগুলো হলো ওয়ার্ল্ড ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কাউন্সিল, সুন্দরবন, স্বাধীন বাংলাদেশ কালচারাল অর্গানাইজেশন, স্বদেশ, প্রিয়বাংলা, পিপল এ্যান্ড টেক ফাউন্ডেশন, ম্যারিল্যান্ড ফ্রেন্ডস এ্যান্ড ফ্যামিলি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি এলামনাই ইন ডিসি, ফ্রেন্ডস এ্যান্ড ফ্যামিলি, ফসল, একাত্তর ফাউন্ডেশন, ধ্রুপদ, ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই ফোরাম, বুয়েটারিয়ান ইউএসএ ক্যাপিটাল রিজন, বেস্ট, বাইটপো, বাই, বাকোডিসি, বাকডিসি, বাফি, আমরা নারী, আবিয়া, ও আমরা বাঙালি ফাউন্ডেশন।

অনুষ্ঠান উপলক্ষে ‘চেতনায় একুশ’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। এর দায়িত্বে ছিলেন এন্থনী পি গোমেজ। শহিদ মিনারটি নির্মাণ করেছেন কচি খান। টেকনিক্যাল ও ভ্যানু সিলেকশনে সহযোগিতা করেন প্রিয়লাল কর্মকার।

হিরন চৌধুরীর পরিকল্পনা এবং আবু রুমীর সহযোগিতায় একুশের দলীয় গান ও নৃত্য অনুষ্ঠান ‘২১ শুধু একটি সংখ্যা নয়: মুক্তির মূলমন্ত্র’ দর্শকদের বিপুল সাড়া পেয়েছে। এ ছাড়া একুশের কবিতা পাঠ করেন মিজানুর ভূইয়া, শিল্পী রোজারিওর পরিচালনায় ছোটদের একুশে নৃত্য- আমার মুখের ভাষা, জাফর রহমানের পরিচালনায় একুশের পুঁথি, এবং শম্পা বনিক এর পরিচালনায় বর্ণমালার প্রজন্ম; অনুষ্ঠানগুলিতে স্থানীয় শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন। উপস্থাপনায় ছিলেন ড. ফয়সাল কাদের, ফারহানা লিনা ও আতিয়া মেহজাবিন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মঙ্গোলিয়া ও মেক্সিকোর দলীয় নৃত্য পরিবেশ ছিল নজরকাড়া।

অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আই-গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিফ, সাংস্কৃতিক সংগঠক প্রিয়লাল কর্মকার, হিরন চৌধুরী, শরাফত হোসেন বাবু, এন্থনী পি গোমেজ, আবু রুমী, স্যাম রিয়া, মিজান ভুইয়া, কবির পাটোয়ারী, নুরল আমিন, জিবক বড়ুয়া, মোহাম্মদ কাজল, মজনু মিয়া, হারুন ভূইয়া, মহসিনা জান্নাত রিমি, ড. ফয়সাল কাদের, হাসান চৌধুরী, শতরূপা বড়ুয়া, ড. শোয়াইব চৌধুরী, কবির আহমেদ, মিজান রহমান, কচি খান, প্রদীপ ঘোষ, ড্যামিয়ান ডিয়াস, নিজামউদ্দিন ভূইয়া, মোহাম্মদ রহমান, ফারুক হোসেন, সালেহ আহমেদ, গোলাম মাওলা, সাহেদা আবেদিন, হাসনাত সানি, আবু সরকার, মোহাম্মদ হায়দার, এম মিজানুর রহমান, জিয়াউদ্দীন আহমেদ, দিলশাদ চৌধুরী ছুটি, আইয়ান রশীদ, তুহিন ইসলাম, ইনতিখাব সিদ্দিকি, দেওয়ান বিপ্লব, সেলিম আকতার, জাকির হোসাইন, জাহিদ হোসাইন, জিআই রাসেল, মাহফুজ রহমান শুভ্র, লিটু চৌধুরী, তৌফিক মতিন, ববিনা মাহবুব, নাজির উল্লাহ প্রমুখ।