শুরু হলো বাঙালির গৌরবের মাস, স্বাধীনতার মাস। অগ্নিঝরা মার্চ। ১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা এ মাসেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ডাকেই মুক্তিকামী মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। দীর্ঘ ন’মাসের যুদ্ধে ত্রিশ লাখ জীবনের বিনিময়ে, স্বাধীনতা আর লাল সবুজ পতাকা পেয়েছিলো বাঙালি জাতি।

একাত্তরের মার্চেই বাঙালীর মুক্তির আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়। পহেলা মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার পরই হাজারো মানুষ ঢাকার পল্টন-গুলিস্তানে বিক্ষোভ শুরু করে। এদেশের মানুষ বুঝতে পারে, পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে আর এক মানচিত্রে থাকা সম্ভব নয়।

মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকিস্তান সরকারের হটকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এদেশে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবি ক্রমশ বেগবান হতে থাকে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু দোসরা মার্চ থেকে দুই দিনের জন্য তৎকালীন পাকিস্তানে হরতালের ডাক দেন এবং ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জনসভার ঘোষণা দেন। ৭ই মার্চ বাঙালি জাতির এই অবিসংবাদিত নেতা ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এরপর আসে ২৫শে মার্চ- কালরাত্রি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারশেন সার্চলাইট’ এর নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গর্জে ওঠে বাঙালি। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, অগ্নিঝরা দিন। যার হাত ধরেই আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।