সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কার্যক্রম শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদক কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ। তিনি বলেন, আমরা কাজ শুরু করেছি। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য দুদক প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তিনি বলেন, “আমরা এখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নথি পাঠিয়েছি, যেটাকে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) বলে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তা বিদেশি অ্যাম্বাসিতে যাবে, সেখান থেকে বাংলাদেশের অ্যাম্বাসিতে যাবে। সেই কাজ আমরা শুরু করেছি। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য দুদক প্রক্রিয়া শুরু করেছে।”

রাজউকের একটি আবাসন প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুদক ছয়টি মামলা দায়ের করেছে।

টিউলিপ সিদ্দিককে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কমিশনার বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় নথি পাঠিয়েছি, যেটি ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর)’ হিসেবে পরিচিত। এই নথি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশি দূতাবাসে যাবে এবং সেখান থেকে তা বাংলাদেশের দূতাবাসে পৌঁছাবে। আমরা ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু করেছি।

তিনি আরও জানান, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে, এবং তাকে প্রেরিত চিঠিপত্রও তার বাংলাদেশি ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। তাই তাকে বিদেশি নাগরিক হিসেবে দেখা হচ্ছে না। মামলা দায়ের হওয়ার পর তিনি বিদেশে অবস্থান করায়, তাকে ফিরিয়ে আনতে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।

শেখ হাসিনার বিষয়ে রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে কি না জানতে চাইলে কমিশনার জানান, এ বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই এবং এটি এখনো কমিশনে আলোচিত হয়নি। তবে তিনি বলেন, এটি আগামী কমিশন সভায় আলোচিত হতে পারে। তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ে সরকার ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থাগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চুক্তি সম্পন্ন হলে তাদের সহায়তা পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে একাধিক মামলা হয়। এসব মামলায় আদালত বিভিন্ন সময়ে অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বাতিল করা হয় শেখ হাসিনার পাসপোর্টও। সবশেষ, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ১০ সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ‘লক’ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।