২০২৫ সালের হজের জন্য নিবন্ধনের সময় শেষ হয়েছে রোববার (১৫ ডিসেম্বর)। গত বছরের চেয়ে এবার হজের খরচ এক লাখ টাকার বেশি কমিয়ে এবং দফায় দফায় সময় বৃদ্ধি করেও হজযাত্রীদের সাড়া মেলেনি। এখনও অর্ধেকের বেশি কোটা খালি রয়েছে। প্রায় ৫৭ হাজার কোটা ফাঁকা রেখে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) শেষ হয়েছে চলতি বছরের হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন। সৌদি সরকারের আলটিমেটামের কারণে নিবন্ধনের সময় আর বাড়ায়নি মন্ত্রণালয়।
হজ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার মধ্যে রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত ৬২ হাজার ২১২ জন হজযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন। আর হজে যাওয়ার জন্য ব্যাংকে ভাউচার জমা দিয়েছেন প্রায় ৮ হাজার হজযাত্রী। সব মিলিয়ে ৭০ হাজার হজযাত্রী আগামী বছর হজ করার জন্য নিবন্ধন করেছেন।
তবে, সৌদি সরকার বাংলাদেশের জন্য ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করলেও এখনো ৫৭ হাজার কোটা ফাঁকা রয়েছে। নিবন্ধিত ৬২ হাজার ২১২ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৭৫৯ জন সরকারি প্যাকেজে এবং ৫৭ হাজার ৪৫৩ জন বেসরকারি প্যাকেজে নিবন্ধন করেছেন।
নিবন্ধিত হজযাত্রীরা যাতে দ্রুত টাকা জমা দিতে পারেন, সে জন্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, সাধারণ ব্যাংকে টাকা জমা হলে এক কর্মদিবস প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ যারা আজ (রোববার) টাকা জমা দিয়েছেন, তাদের টাকা আগামী মঙ্গলবার জমা হবে, কারণ সোমবার মহান বিজয় দিবসের সরকারি ছুটি।
হজ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ অনুবিভাগ) ড. মো. মঞ্জুরুল হক জানান, চলতি বছর তিন দফায় নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে সৌদি সরকারের আল্টিমেটামের কারণে আর সময় বাড়ানো সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ‘আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে হজযাত্রীদের টাকা সৌদি সরকারকে পাঠাতে হবে। যদি তা না হয়, তবে ৫ নম্বর তাঁবু বাংলাদেশিদের জন্য পাওয়া যাবে না।’
হজ কোটা পূরণ না হওয়ায় উদ্বিগ্ন ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেই সাথে, ধর্ম মন্ত্রণালয় বিমান ভাড়া কমানোর জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিমান ভাড়া নির্ধারণের জন্য আধা-সরকারি পত্র (ডিও) দিয়েছেন বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফকে।
ডিওতে খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘বিমান ভাড়া কমালে বাংলাদেশের হজ কোটা পূরণ সহজ হবে এবং সৌদি সরকারের কাছে দেশের সম্মান বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে।’
২০২৫ সালে হজে যাওয়ার জন্য সরকার ২টি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সাশ্রয়ী প্যাকেজ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৪২ টাকা, এবং অন্য প্যাকেজের খরচ ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এই প্যাকেজে বিমান ভাড়া কমিয়ে ২৭ হাজার টাকা কমানো হয়েছে, তবে খাবারের টাকা (৪০ হাজার টাকা) এবং কোরবানির জন্য ৭৫০ সৌদি রিয়াল আলাদাভাবে নিতে বলা হয়েছে। গত বছর এসব খরচ প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সরকারি প্যাকেজের সঙ্গে সমন্বয় করে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকরাও একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। তারা বিমান ভাড়া কমানোর দাবিও জানিয়ে আসছিলেন।