আজ সেই ভয়াল ৩রা নভেম্বর। শোকাবহ জেল হত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধের চার সংগঠক- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আড়াই মাসের মাথায় মুক্তিযুদ্ধের চার সংগঠককে হত্যা করে ঘাতকরা দেশের স্বাধীনতার অর্জনকে মুছে দিতে চেয়েছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। জেলহত্যার বিচার শেষ হলেও দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে এই কলংকের দাগ কখনই মুছবার নয়।

কারাগার হলো সারা দুনিয়ার নিরাপদ হেফাজত। সেই নিরাপদ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ১৯৭৫ সালের তেসরা নভেম্বর ঠান্ডা মাথায় খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চার বিশ্বস্ত সৈনিক- বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে।

তার কয়েক মাস আগে একই খুনি চক্র বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। কেবল রাজনৈতিক কারণে এই হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিল ক্ষমতা দখলকারীরা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জেল হত্যা মামলাটি পুণরুজ্জীবিত হয়। আর আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে শেষ হয় চূড়ান্ত বিচার।

দীর্ঘদিন ধরে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের দিনকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবিতে সরব জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরা। এই দাবি বাস্তবায়ন না হলে স্বাধীনতার ইতিহাস অপূর্ণ রয়ে যাবে বলে মনে করেন তেসরা নভেম্বর নিহত প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের সন্তান সোহেল তাজ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ প্রমাণ করা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করাই ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত উল্লে­খ করে তাদের সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানান জাতীয় চার নেতার পরিবারের সন্তানরা।