শ্রম আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে সরকার। যথাযথ ত্রিপক্ষীয় আলোচনা শেষে দ্রুততার সঙ্গে, সম্ভব হলে জাতীয় সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে আইনের সংশোধনীর খসড়াটি উপস্থাপন করা হতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ৩৫০ তম গভর্নিং বডি অধিবেশনে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জেনেভায় বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেছেন, বৈশ্বিক মন্দা ও নানামুখী চ্যালেঞ্জ থাকা স্বত্বেও শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনীয় শ্রমসম্পর্ক তৈরির জন্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নের আলোকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রমক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে।
বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে আইনগত সংস্কার, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন, শ্রম সংক্রান্ত পরিদর্শন এবং শ্রমিকদের অন্যান্য অধিকার এ চারটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী জানান, প্রস্তাবিত শ্রম আইন সংশোধন বিলে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য শিল্প খাতে প্রয়োজনীয় শ্রমিক সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনা, ইউনিয়নের প্রি অনায্য আচরণের শাস্তি দ্বিগুণ করা, বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করার শাস্তি তিনগুণ করা, শিশুশ্রমের শাস্তি চারগুণ করার বিধান রাখার কথা বলা আছে। প্রস্তাবিত এ সংশোধনীটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে এবং নৌ পরিবহন খাতে ট্রেড ইউনিয় গঠন ও পরিচালনা সহজীকরণ, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে আপিল আবেদন সহজ করার বিধান সংযুক্ত কর কথাও বলা আছে।
প্রচলিত আবেদন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি অনলাইন ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন চালু করা, প্রাক-আবেদন সেন চালুকরণ, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণের ফলে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে গুণগত ও পরিমাণগত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, এর ফলে গত নয় বছরে তৈরি পোশাক খাতে গত নিবন্ধন নয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রায় ত্রি লক্ষ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত। তাছাড়া, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন ভুক্তি আবেদনের সফলতার হার গত চার বছরে ৬ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।