অনেক নাটকীয়তার পর এশিয়া কাপের সুপার ফোরে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর শনিবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা, প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল শ্রীলঙ্কা। আর এই ম্যাচে লঙ্কানদের ৪ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরের শুভসূচনা করল বাংলাদেশ দল।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় টাইগাররা। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টসে জিতে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে পাঠান টাইগার অধিনায়ক লিটন দাস। শুরুটা বাংলাদেশ ভালো করলেও ক্যাচ মিসের মহরায় আর মুস্তাফিজ বাদে অন্যদের বোলিংয়ে খেই হারিয়ে ফেলে। তাতে শ্রীলঙ্কার ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দাড় করায়। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে সাইফ এবং হৃদয়ের অর্ধশতকে ১ বল হাত্র রেখে ৪ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা।

১৬৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা। তবে দলীয় ১ রানের মাথায় তানজিদ হাসান তামিম কোনো রান না করেই বিদায় নেন। পরবর্তীতে সাময়িক সেই চাপ সামলে নেন সাইফ হাসান এবং লিটন দাস। একসময় ৫০ রানের জুটিও পার করেন এই দুই ব্যাটার।

তবে দলীয় ৬০ রানে লিটন ফিরে যান ব্যক্তিগত ২৩ রান করে। এরপর সাইফ একাই চার ছক্কার ইনিংস খেলতে থাকেন, তাকে সঙ্গ দেন তাওহীদ হৃদয়। একসময় সাইফ তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক। তখন ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটাচ্ছিলেন হৃদয়। ৪৫ বলে ৬১ রান করে বিদায় নেন সাইফ। এরপর ইনিংসের বাকি সময় হৃদয় লড়াই করেছেন। সবশেষ দুই ম্যাচে রান করতে না পারা এই ব্যাটার এদিন তুলে নেন অর্ধশতক। তবে জয়ের ১০ রান বাকি থাকতে ব্যক্তিগত ৫৮ রান করে ফিরে যান হৃদয়। পরে শামীম পাটোয়ারী ১২ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। তবে অন্য প্রান্তে ছোট একটি নাটকই বয়ে যায় ততক্ষণে।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫ রান। প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ সমতায় আনেন জাকের আলী। তখন ৫ বল থেকে মাত্র ১ রান প্রয়োজন। কিন্তু পরের তিন বলে আউট হয়ে যান জাকের ও শেখ মেহেদি। উত্তেজনা বাড়লেও শেষ পর্যন্ত পঞ্চম বলে প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন নাসুম আহমেদ। ফলে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ।

এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি বেশ ভুগিয়েছে টাইগারদের। মেন্ডিস-নিশানকা ৫ ওভারের আগেই তুলছিলেন ৪৪ রান। তাসকিনের বলে ২২ রান করা নিশানকা ফিরলে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।

লংকান টপ অর্ডারের বাকিরা তেমন বড় স্কোর গড়তে পারেননি। ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই মেন্ডিস ৩৪ রানে ফেরেন মাহেদির বলে। মিশরাকেও মাত্র ৫ রানে ফিরিয়েছেন মাহেদি। ১৬ রান করা কুশল পেরেরা ফিরেছেন মুস্তাফিজের আঘাতে। ৯৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে ছিল শ্রীলঙ্কা।

এরপর দলকে বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন দাসুন শানাকা। ৩ চার ও ৬ ছক্কায় ৩৭ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন শানাকা। অন্য প্রান্তে অবশ্য তাকে তেমন সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। মিডল অর্ডারের বিপর্যয়ে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৮ রানে থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান।