দ্বাদশ জাতীয় সংসদে এখন বাকি সংরক্ষিত নারী আসন নির্বাচন। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে এবার আওয়ামী লীগ ৩৮টি (নৌকা প্রতীকে জয়ী জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির দুইজনসহ), জাতীয় পার্টি ২টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটভুক্ত হয়ে ১০টি সংরক্ষিত আসন পেতে পারেন। তবে নিজেরা মনোনয়ন দেয়ার প্রক্রিয়ায় না গিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা তাদের আসনের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছেন।

ফরিদপুর-৩ থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বলেন, আমরা নৌকা পাইনি কিন্তু আমরা দলের বিভিন্ন পদে আছি, দায়িত্বে আছি। আবার আমরা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। আমরা বলেছি, এলাকায় কাজ করতে নানা অসুবিধা হচ্ছে। সুতরাং দলের মধ্যে যেহেতু আছি সেহেতু আমাদের একত্রিত করা হোক।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, স্বতন্ত্র হিসেবেই তোমরা কাজ করো। এখানে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ এটা আমার ডান হাত, ওটা আমার বাম হাত। যারা দলীয় মনোনয়ন পায়নি, তারা সংসদে বেশি আলোচনা ও সমালোচনার সুযোগ পাবে।

সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে স্বতন্ত্রদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে এ কে আজাদ বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলে এসেছি, যারা দীর্ঘদিন দলের জন্য কাজ করেছেন। যারা সংসদে জনগণের জন্য ভূমিকা রাখতে পারবেন এমন কাউকে আপনি মনোনয়ন দেবেন। এটা আমরা নিজে থেকে বলে এসেছি। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আজ আওয়ামী লীগ এখানে এসেছে, সেসব পরিবারকে স্বীকৃতিস্বরূপ সংরক্ষিত নারী আসন দিতে আমরা অনুরোধ করেছি।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা দলের সাংগঠনিক কাজে জড়িত থাকতে পারবে কি না– জবাবে এই সংসদ সদস্য বলেন, অবশ্যই তারা জড়িত থাকতে পারবেন। কারণ তারা সংগঠনের বিভিন্ন পদে দায়িত্বপালন করছেন। সুতরাং এটাতে কোনো বাধা নেই।

ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী বলেন, এখানে যারা উপস্থিত ছিলেন প্রায় সবাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আমাদের গায়ে যদি এখনো স্বতন্ত্রের সিল লেগে থাকে, তাহলে দলের পদে থেকে কাজ করতে আমাদের অসুবিধা হবে এবং এখনো হচ্ছে। মানুষ বিভিন্ন কথা বলছে। সেক্ষেত্রে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) মতামত কী হবে? জবাবে তিনি বলেছেন, দলীয় সংসদ সদস্যরা যতটুকু কথা বলতে পারবেন, তার চেয়ে আমরা বেশি কথা বলার সুযোগ পাব।

সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, স্বতন্ত্ররা সবাই উপস্থিত হয়েছি এবং প্রধানমন্ত্রী সবার পরিচয় নিয়েছেন, সবার কথা শুনেছেন। ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সবাই মিলে আমরা দাবি করেছি, আমরা আওয়ামী লীগের লোক। আওয়ামী লীগেই থাকতে চাই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তোমরা আওয়ামী লীগের লোক, আওয়ামী লীগেই আছ। সুতরাং আমরা মনে করি, আমরা আওয়ামী লীগে যাচ্ছি এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সংসদে ভূমিকা পালন করব।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ৭ জানুয়ারি। দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন এবং জয়ী হন। বিজয়ী ৬২ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৫৯ জন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত, কেউ কেউ পদধারী নেতা।

আগামী ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে। সংসদে বিরোধী দল হিসেবে থাকবে জাতীয় পার্টি। যা নিয়ে এরই মধ্যে সংসদ সচিবালয় থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।