এবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স। ১০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল থেকে রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহর বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ, ব্যারিকেড তৈরি এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা সবকিছু বন্ধ করার (‘ব্লোকঁ তু’) আন্দোলনের ডাক দিলে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজপথ।
এ সময় পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপে বিক্ষোভকারী তরুণদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশ এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে।
নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়াঁ লেকর্নু দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই পুরো দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে।
রাজধানী প্যারিস, রেনেস, নান্টেস, মন্টপেলিয়ে এবং মার্সেইল শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করেছে এবং আগুন ধরিয়েছে।
রেনে একটি বাসে আগুন লাগানো হয়েছে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেললাইনে বৈদ্যুতিক লাইনের ক্ষতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বিক্ষোভকারীরা মূলত প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বাজেটে ব্যয় সংকোচন নীতি এবং সামাজিক সেবার বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিটেইলউ জানান, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রেনেসে একটি বাসে আগুন লাগানো হয়েছে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি বিদ্যুৎ লাইনের ক্ষতির কারণে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। তবে, ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আগের বিক্ষোভগুলোর তুলনায় এই প্রতিবাদ প্রাথমিকভাবে শান্ত বলে মনে হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ‘ব্লক এভরিথিং’ আন্দোলনটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেয়রু’র কঠোর বাজেট নীতির ওপর ক্রমবর্ধমান হতাশার ফল। এই নীতিতে দারিদ্র্য ও বৈষম্য তীব্রভাবে বেড়ে গেছে।
গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেয়রু পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর ম্যাক্রোঁ তার ঘনিষ্ঠ মিত্র প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন। দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি ফ্রান্সের পঞ্চম এবং এক বছরের মধ্যে চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী।
লিওঁর একজন বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ মিত্রকে শীর্ষ পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত ‘গালে চপেটাঘাত’।
এই আন্দোলনটি ম্যাক্রোঁর প্রথম মেয়াদের ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়, তখন জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও ব্যবসা-বান্ধব নীতির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ হয়েছিল।