১২ই জুলাই ঢাকায় সমাবেশ থেকে সরকার পতনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। অবিলম্বে সরকার পদত্যাগ না করলে রাজপথেই ফয়সালা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশে যোগ দিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা জানান।

দলটির শীর্ষ এই নেতা বলেছেন, ‘আগামী ১২ জুলাই ঢাকার সমাবেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা আসবে। যার মধ্যদিয়ে দেশের সব মানুষকে জাগ্রত করে এই সরকারকে বিদায় দিয়ে জনগণের নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আসুন আমরা সবাই উঠে দাঁড়াই।’

নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন এবং খালেদা জিয়াসহ আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এতে যোগ দিয়ে বিএনপি’র নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৪ বছরে প্রতিটি খাতে দুর্নীতি-লুটপাট করে দেশের সকল অর্জনকে ধ্বংস করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণরে দাবি আদায়ে আমাদের কথা বলার অধিকারে ১৪ বছর ধরে বাঁধা দিয়ে আসছে সরকার। আমরা এক কঠিন সময় ও সংকটের মধ্যে উপনীত হয়েছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্ব থাকবে কি না তা কয়েক মাসের মধ্যেই নির্ধারণ হবে।’

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, বেআইনিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ব্যবহার করে। আর তারাই বলে দেশে না কি সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। তারা মনে করে দেশটা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। তাদের তালুকদারি। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করেছে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বলছে- তারা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করবে। কিন্তু কোন সংবিধান? যেটা তারা নিজেদের মতো কাটা-ছেঁড়া করেছে, সেই সংবিধান? আমরা বলেছি, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা। যেটা ১৯৯৬ সালে নির্ধারণ হয়েছিল। আজকে কেউ ভোট দিতে পারেনি। তরুণরা ভোট দিতে পারেনি। এই কথা বলতে গিয়ে অনেককে মেরে পঙ্গু করা হয়েছে। আমাদের সিলেটের নেতা এম ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত দুটি নির্বাচনে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। সে জন্যই আমরা আবারও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলে ধরেছি। যদিও আওয়ামী লীগ নিজেরা এই দাবিতে আন্দোলন করেছিল। আজকে এই সরকার ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু দেয়নি। চার কোটি যুবক এখন বেকার। এমতাবস্থায় তরুণদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ বাঁচাতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

এ জন্য সরকারকে বিদায় করা ছাড়া কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, তারুণ্যের সমাবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে তরুণরা এগিয়ে আসছেন।