কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে ঘটা সহিংসতায় সব মিলিয়ে ১৪৭ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার (২৮শে জুলাই) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ১৪৭ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃতদের মধ্যে পুলিশ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছে বলেও জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল।

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের পুলিশ হত্যার বিভিন্ন ছবি দেখান। পুলিশ যখন পারছিল না, তখন সেনাবাহিনীকে ডাকা হয় এবং কারফিউ জারি করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্রমে দেশ স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ক্রমেই আমরা সান্ধ্য আইন শিথিল করছি, যখন আরও স্বাভাবিক হয়ে যাবে তখন আমরা কারফিউ উঠাতে সক্ষম হব।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এই কয়দিনের আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের একটা তালিকা আমাদের কাছে আছে। এটি আমরা আরও যাচাই-বাছাই করছি। আরও যদি দুয়েকজনের খবর পাই, তবে তা অন্তর্ভুক্ত করব।’

নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কখনো বলা হচ্ছে ৫০০, কখনো বলা হচ্ছে ১০০০। সেজন্য আমাদের কাছে যে হিসাব সেটি আমরা দিলাম।’ তিনি বলেন, ‘দোষী ব্যক্তিদের আমরা অবশ্যই শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনব। আমরা কাউকে ছাড় দেবো না।’

ব্লক রেইড দিয়ে গ্রেফতার হচ্ছে, শিশুদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শিশুদের গ্রেফতার করার কথা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বলা হচ্ছে। এ কাজে (সহিংসতা) টাকার বিনিময়ে কিশোর গংদের কাজে লাগানোর তথ্য আছে।‘

আত্মসমর্পণের পরও পুলিশ গুলি করেছে কেন?- এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পুলিশ ট্রেনিং দেওয়া পুলিশ।‌ তারা অযথা গুলি করে না। কারণ, তাদের প্রতিটি গুলির হিসাব দিতে হয়। প্রতিটি মৃত্যুর জবাবদিহিতা তাকে করতে হয়। পুলিশ অযথা গুলি করেছে, শিশুকে মেরে ফেলেছে- এগুলো সম্পূর্ণই গুজব, অপপ্রচার।’

গণগ্রেফতারে নির্দোষ মানুষকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে তথ্য আছে? কারে আমরা বিনা ইসে ধরেছি। আমাদের গোয়েন্দাবাহিনী পুলিশকে তালিকা করে দিয়েছে। প্রতিটি গ্রেফতার ভিডিও ফুটেজ দেখে করা হচ্ছে।’