সাতক্ষীরায় অসুস্থ বৃদ্ধ বাবার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে যাওয়ার পথে শহরের ইটাগাছা হাটের মোড়ে ছেলেকে দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন এএসআই সুভাষ সেন। বাড়িতে অক্সিজেনের অভাবে ওই বৃদ্ধ মারা যায়। এ ঘটনায় এএসআই সুভাষ সেনকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে শহরের ইটাগাছা হাটের মোড়ে মোটরসাইকেল আটকানোর এ ঘটনা ঘটে। ওদিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের বৈচনা গ্রামে বাড়িতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান রজব আলী মোড়ল (৬৫)।
রজব আলীর ছেলে ওলিউল ইসলাম জানান, বাবা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। সিলিন্ডার অক্সিজেন দিয়ে বাড়িতে রাখা হয়েছিল। অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার আগে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে শহরে যাই। পথিমধ্যে হাটেরমোড়ে পৌঁছালে ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সুভাষ চন্দ্র সেন আমাকে থামান। এরপর গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। জরুরি হওয়ায় কাগজপত্র রেখে এসেছি জানালে টাকা দাবি করে। আমি কান্নাকাটি করলেও ছাড়েনি। পরে বাবার অক্সিজেন কেনার জন্য থাকা ৫০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দিলে গাড়ির চাবি ফেরত দেন।
তিনি বলেন, এরপর অক্সিজেন নিয়ে বাড়িতে ফিরে দেখি সিলিন্ডারে অক্সিজেন নেই। বাবা মুমূর্ষ। আমি মুখে পানি দিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে বাবা। ১৫ মিনিট আগে পৌঁছালে বাবা মারা যেতেন না।
তবে এই অভিযোগের বিষয়ে এএসআই সুভাষ চন্দ্র বলেন, মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলাম। দেখাতে পারেননি সেজন্য বাড়ি থেকে কাগজপত্র এনে দেখাতে বলেছিলাম। অক্সিজেনের বিষয়টি জানার পর বলেছিলাম, পরে এসে কাগজপত্র দেখিয়ে যেতে। তাকে বেশি সময় আটকে রাখিনি। পরে শুনলাম তার বাবা মারা গেছেন। এটি দুর্ঘটনাবশত হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাতেই এএসআই সুভাষ সেনকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে।