জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রয়াত চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দিনটি পালনে জাপা নানা কর্মসূচি নিয়েছে।
ঢাকাসহ সারা দেশে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ এবং স্মরণসভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পার্টির প্রতিষ্ঠাতাকে স্মরণ করবে জাতীয় পার্টি ও দলটির বিভিন্ন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠন।
ঢাকায় জাতীয় পার্টির কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সকাল ৯টায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে হবে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত। বিকাল ৩টায় রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি। জাতীয় পার্টি মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপিসহ দলের শীর্ষ নেতারা এ সময় উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮২-১৯৯০ সাল পর্যন্ত ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিসহ গ্রাম-বাংলার উন্নয়নে কাজ করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক বিল মওকুফসহ উপজেলা ব্যবস্থার প্রবর্তকও ছিলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধান। তার আমলেই মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। ওষুধ নীতি প্রণয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ঢাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ, যমুনা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণসহ তার যুগোপযোগী সিদ্ধান্তগুলো এখনো প্রশংসনীয়।
১৯৮৬ সালে এরশাদ প্রতিষ্ঠা করন জাতীয় পার্টি। শুরু থেকেই বৃহত্তর রংপুর ছিল জাতীয় পার্টির দুর্গ। এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কারাগারে থেকে পাঁচটি আসনে জয় লাভ করেন। যার নেপথ্যে ছিল এরশাদের জনপ্রিয়তা এবং রংপুরের মানুষের ভালোবাসা। এ কারণে মৃত্যুর আগেও রংপুর-৩ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর পর ঢাকায় দাফন কার্য সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও রংপুরের মানুষ এরশাদকে পল্লী নিবাসে সমাহিত করেন।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুবার্ষিকীতে জিএম কাদের ও রওশন এরশাদপন্থি দুটি অংশই পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় পার্টির একাংশ (জিএম কাদের) রোববার বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্মরণসভার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলটির চেয়ারম্যান এবং বিরোধী দলের নেতা জিএম কাদের। এছাড়াও জাপার কাকরাইল এবং বনানী কার্যালয়ে দিনব্যাপী দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সকালে দলীয় কার্যালয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন নেতারা।
অন্যদিকে জিএম কাদের অনুসারীদের আয়োজন থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরত্বে বিভিন্ন সময়ে স্মরণসভার আয়োজন করেছে জাতীয় পার্টির রওশনপন্থিরা। রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে স্মরণসভায় রওশন এরশাদ সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে।