আজ ২০শে মার্চ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল­ুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ সকাল ৮টায় আওয়ামী লীগ নেতারা এবং তার পরিবারের সদস্যরা রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সাবেক এ রাষ্ট্রপতির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া দেশব্যাপী দোয়া মাহফিল, কুরআনখানি ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।

তার জন্মস্থান ভৈরবে নানান কর্মসূচিতে দিনটি পালন করছে উপজেলা প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, দিবসটি উপলক্ষে ভৈরব উপজেলা প্রশাসনের দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-সকাল ১০টায় উপজেলা চত্বরে জিল­ুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ।

এর পরর বেলা ১১টায় শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতা। এরপর আলোচনা সভা ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। এছাড়া আজ বাদ আসর বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা ও মন্দিরে বিশেষ দোয়া, মিলাদ ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে, বেলা ১১টায় স্থানীয় সরকারি কাদির বক্স উচ্চ বিদ্যালয়ে যৌথভাবে দোয়া ও তবারক বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম বাকী বিল­াহ।

১৯২৯ সালের ৯ই মার্চ ভৈরব শহরের ভৈরবপুরে জন্মগ্রহণ করেন জিল­ুর রহমান। তার বাবা মেহের আলী মিয়া ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী ও তৎকালীন ময়মনসিংহ লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা বোর্ডের সদস্য।

জিল­ুর রহমান ১৯৪৫ সালে ভৈরবের কেবি হাইস্কুল থেকে মেট্রিক, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পরে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৬৫তে পাকিস্তানের আইয়ুব খান এবং ১৯৬৮ সালে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আন্দোলন করেন।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশ নিয়ে স্বাধীনতাকালীন সরকারের সঙ্গে থেকে দেশ স্বাধীনতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পর তিনি আওয়ামী লীগের তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ৫ বছর। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলিভেনের সরকারের সময় শেখ হাসিনা জেলে থাকাকালীন তিনি দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ সময় তিনি দলকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেন।

২০০৯ সালের ১২ই ফেব্র“য়ারি তিনি দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পরে তিনি অসুস্থ অবস্থায় ২০১৩ সালের ২০শে মার্চ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান। তার সহধর্মিণী ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগনেত্রী আইভি রহমান। তিনি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। জিল­ুর রহমানের ছেলে বিসিবি সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ-সদস্য নাজমুল হাসান এবং দুই মেয়ে তানিয়া ও ময়না।