সাবেক শিল্পমন্ত্রী এবং নরসিংদী ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন – র্যাব। বুধবার (২৫শে সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাবের একটি দল।
র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস জানান, গত ৪ আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১টা ২২ মিনিটে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তার বাবার গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়েছেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাদী লিখেন, ‘আল্লাহ সর্বশক্তিমান, আমাদের নরসিংদীর গর্ব-আপনাদের ভালোবাসার মাটি ও মানুষের নেতা অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন কিছুক্ষণ আগে তার নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ওনি কোথাও পালিয়ে যাননি, কোনো সময় পালাবেনও না। আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব ইনশাআল্লাহ। আপনারা মনোহরদী বেলাবোর শান্তি প্রিয় মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। আমাদের পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। আর আমার বাবার হেফাজতের জন্য মহান আল্লাহ্র নিকট দোয়া করবেন। ফি আমানিল্লাহ।’
১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন নরসিংদী-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নরসিংদী-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর জাতীয় সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বানানো হয় তাকে।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও টানা চারবার তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নরসিংদী-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং দ্বিতীয়বারের মত শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভূত্থান, স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন তিনি কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পট-পরিবর্তনের পর তিনি যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।