করোনা অতিমারীসহ নানা কারণে কয়েক দফা পেছানোর পর আজ মধ্যরাত থেকে শুরু হলো কাঙ্খিত ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’। আজ বুধবার (১৫ই জুন) থেকে শুরু হওয়া এ শুমারি চলবে সপ্তাহব্যাপী (২১শে জুন পর্যন্ত)। এটি দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি।

দেশের মোট জনসংখ্যা এখন কত, তা জানতেই মূলত রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, বাসস্ট্যান্ডসহ দেশে এ ধরনের স্থানগুলোতে ভাসমান মানুষ গণনাসহ তাদের সম্পর্কে মৌলিক জনমিতিক, আর্থ-সামাজিক ও বাসগৃহসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের মধ্যদিয়ে শুরু হবে জনশুমারি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আওতায় এ শুমারির মূল তথ্যসংগ্রহ শুরুর আগে সার্বিক বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন চত্বরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন সার্বিক বিষয়ে উপস্থাপনা করেন।

বিবিএসের মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম জানান, গণনায় সবার কাছ থেকে ৩৫টি তথ্য চাওয়া হবে। গৃহকর্তার কাছ থেকেও তথ্য চাওয়া হবে। স্বচ্ছ জনশুমারি ও গৃহগণনার স্বার্থে সারাদেশে একযোগে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন গণনাকারী ট্যাবের (কম্পিউটার) সাহায্যে সাত দিন ধরে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে অংশ নেবেন। যেসব বিদেশি বাংলাদেশে অবস্থান করছেন, তাঁদেরও গণনা করা হবে। বিদেশে থাকা প্রবাসীরাও অন্তর্ভুক্ত হবেন। কোনো রকম নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে স্থানীয় থানা প্রশাসনের কাছে গণনাকারীদের ছবিসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়েছে। যে কোনো প্রয়োজনে থানা প্রশাসন সহায়তা দেবে। ৫টি প্রধান উদ্দেশ্যে জনশুমারি ও গৃহগণনা করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- প্রতিটি খানা এবং খানার সদস্যদের গণনা করে মোট জনসংখ্যার হিসাব জানা; দেশের সব বসতঘরের সংখ্যা জানা; সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ; স্থানীয় এবং জাতীয় নির্বাচনের এলাকা নির্ধারণে তথ্য সংগ্রহ এবং জাতীয় সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ। এসব তথ্যের ভিত্তিতে যেখানে যে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন তার সহায়তা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের শুমারিতে ৬৩ হাজার ৫৪৮ জন সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন আইটি সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন জোনাল অফিসার, ১৬৩ জন জেলা শুমারি সমন্বয়কারী এবং ১২ জন বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারীর মাধ্যমে শুমারি শেষ হবে। জনশুমারি আগে আদমশুমারি নামে পরিচিত ছিল। সর্বশেষ পঞ্চম শুমারি হয়েছিল ২০১১ সালে। ১০ বছর পরপর এ শুমারি হওয়ার কথা থাকলেও মহামারির কারণে গত বছর তা সম্ভব হয়নি। মূল উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডিপিপি ) অনুযায়ী, গত বছরের ২ থেকে ৮ জানুয়ারি সারাদেশে জনশুমারি ও গৃহগণনার পরিকল্পনা ছিল। পরে করোনার কারণে তারিখ পিছিয়ে তা ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়। এরপর গণনায় ব্যবহূত ট্যাব কেনা সংক্রান্ত জটিলতায় সময় আরও পিছিয়ে যায়। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ প্রকল্পের আওতায় গৃহের সংখ্যা ও ধরন, বাসস্থানের মালিকানা, খাবার পানির প্রধান উৎস, টয়লেটের সুবিধা, বিদ্যুৎ সুবিধা, রান্নার জ্বালানির প্রধান উৎস- এসব তথ্যও সংগ্রহ করা হবে।