ঘূর্ণিঝড় অশনি’র শক্তি ও গতি দুটোই কমেছে। দীর্ঘ সময় ধরে একই এলাকায় অবস্থানের পর এখন ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি। বাংলাদেশের স্থলভাগ থেকে এখনো এক হাজার কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তবে এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে গতকাল সোমবার (৯ মে) থেকে সারাদেশে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এই বৃষ্টি আগামী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

সোমবারের মত বুধবারও (১১ মে) দেশের উপকূলীয় তিন বিভাগে (খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম) অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় এই তিন বিভাগে আগামী তিনদিন ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

মঙ্গলবার (১০ মে) সকাল থেকেই ঢাকার আকাশ মেঘলা রয়েছে। মঝে মধ্যে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তবে বেলা ৩টার পর থেকে মেঘের আনাগোনা বেড়ে যায়। সাড়ে তিনটার দিকে চারপাশ অন্ধকার হয়ে যেন সন্ধ্যা নামে রাজধানীতে। এরপরই শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি।

মঙ্গলবার ভারি বর্ষণের সতর্কবাণীতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী (২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি) বর্ষণ হতে পারে।

অন্যদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর- ১৩) ঘূর্ণিঝড় অশনির বিষয়ে জানানো হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে পরবর্তী ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটি শক্তি হারিয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও ভারত ও বাংলাদেশে এর প্রভাবে আরো দুই-তিনদিন বৃষ্টিপাত হতে পারে।