সিলেটে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও এখনো দু’টি নদীর ছয়টি পয়েন্টের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বাড়িঘরে থাকতে না পেরে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছেন মানুষ।
জেলা প্রশাসনের হিসেবে সিলেট জেলায় প্রায় ৯ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। বাড়িঘরে পানি উঠে পড়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছেন প্রায় ২২ হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার বিকালে ১৩ উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছে সিলেটের জেলা প্রশাসন।
সিলেট নগরীর তালতলা, জামতলা, যতরপুর, সোবাহনীঘাট, মেন্দিবাগ ও উপশহর এলাকায় কোথাও-কোথাও হাঁটু থেকে কোমর পানি রয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা নোংরা পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন। পানিবন্দি এলাকার মানুষজন কেউ যাচ্ছেন ভ্যান করে, কেউবা রিকশায়। বিশেষ করে উপশহরের বাসিন্দাদের নৌকা ও ভ্যানে করে চলাচল করতে হচ্ছে।
বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে এবং রাস্তা ঘাট ডুবে নগরী, জেলা ও উপজেলা শহরের বাসিন্দাদের মতো গ্রামবাসীদের ভোগান্তি উঠেছে চরমে। দৈনন্দিন কাজও বন্ধ প্রায়। বন্যার পানির তোড়ে টিকতে না পেরে অনেকে নিরূপায় হয়ে ছুটছেন এখন আশ্রয়কেন্দ্রে।
সিলেট সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, সিলেট নগরের ৪২টি ওয়ার্ডের ২৩টি ওয়ার্ডের ৮০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত। জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৬টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৫৪৮টি গ্রামের ৮ লাখ ২৫ হাজার ২৫৬ জন বন্যাকবলিত।
জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ২২৩টি গ্রামের ১ লাখ ২৩ হাজার ৮০০ জন মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে, তাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে ১ হাজার ৪৪০ জন। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক ডুবে যাওয়ায় সিলেট জেলার সঙ্গে গোয়াইনঘাটের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১১৩টি গ্রামের ৯৫ হাজার ৫০০ মানুষ বন্যাদুর্গত হয়েছে, যাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন ৭ হাজার ৩০৩ জন।