সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার পানি কমতে শুরু করায় দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। তবে অনেক বাড়িঘর ও সড়কে এখনও পানি আছে। যেসব এলাকা ও সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে সেখানে সড়কে গর্ত ও ভাঙ্গন বেরিয়ে এসেছে। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার জনপদ এখনও পানির নিচে। বন্যার পানি বেড়েছে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায়। এদিকে নদ-নদীর পানি বাড়ায় নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পানিতে এখনো ভাসছে সিলেট-সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ জনপদ। মঙ্গলবার থেকে কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করেছে। বৃষ্টি ও উজানের ঢল কমে যাওয়ায় ধীরে ধীরে বন্যার উন্নতি হচ্ছে। শহরের বাড়ি-ঘর থেকে পানি নেমে গেছে।

পানি নামার পর দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। বিভিন্ন সড়কের দুইপাশে ভেঙ্গে গেছে। সিলেট সদরের সাথে সব উপজেলার যোগাযোগ এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ভারতের আসাম, শিলচর, মনিপুরের পাহাড়ি এলাকায় বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছে কুশিয়ারা ও সোনাই নদীর। ফলে জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

বৃষ্টি না হওয়ায় সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমছে। তবে খাবার সংকটে আশ্রয়কেন্দ্রের অবস্থান নেয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। দুর্গত এলাকার মানুষের ঘরের চাল-ডাল ও খাবার যা ছিল সবই পানিতে ভেসে গেছে। খাবারের জন্য ত্রাণের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বানভাসী মানুষের।

মৌলভীবাজারে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়া, ও রাজনগর উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে আছে জেলার ৫০টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ। হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগে বাসিন্দারা।

এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যার অবনতি হচ্ছে। লালমিনরহাটে পানিবন্দি লাখো মানুষ। বিভিন্ন বাঁধে ও উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে। কুড়িগ্রামে শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও  বিশুদ্ধ পানির সংকট।

গাইবান্ধায় পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন লাখো মানুষ। সিরাজগঞ্জেও বেড়েছে যমুনা নদীর পানি। ফলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। জামালুপরের ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ।

নেত্রকোণায় ১২ লাখ বানভাসী মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগে। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। এছাড়া বগুড়া, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, শরীয়তপুর ফরিদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।