বন্যার পানিতে এখনও তলিয়ে রয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিবন্দি হয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহরের বাসিন্দারা। বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় দিনযাপন করছে দেড় লাখ পরিবার। বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভাঙ্গায় আশপাশের এলাকা নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। তবে কমতে শুরু করেছে সুরমা ও কুশিয়ারার পানি। তিন দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে পূর্বাভাস কেন্দ্র। তারা জানিয়েছে, আপাতত বড় ধরনের বন্যার শঙ্কাও নেই।

ঘূর্ণিঝড় অশনির পরবর্তী প্রভাবে ভারতের আসামসহ আশপাশের এলাকায় ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা কবলিত সিলেট ও সুনামগঞ্জ। এই দুই জেলায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর বাঁধ বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

সুরমা নদীর পানি উপচে নগরীতে প্রবেশ করায় ডুবে আছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার থেকে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় দেড় লাখ পরিবার। জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে তীরবর্তী প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম তলিয়ে গেছে। সিলেটের ১৩টি উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নই প্লাবিত হয়েছে। অনেকে ঠাঁই নিয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

এদিকে, সুনামগঞ্জে নদীর পানি কমছে, বাড়ছে হাওরের পানি। শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সড়কে ও ঘরে জমে আছে পানি। কয়েকদিনে বিভিন্ন স্থানে ৪টি সেতু পানির চাপে ভেঙে গেছে। সদরে বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

কানাইঘাট, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও অমশীদ পয়েন্টে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, গত ১ সপ্তাহে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ২ হাজার মিলিমিটারের বেশি আর সিলেট অঞ্চলে ৫শ মিলিমিটারের  বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। একদিকে টানা ভারী বৃষ্টিপাত, অন্যদিকে নদনদীর গভীরতা কমে যাওয়া, দুয়ে মিলেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে আসায় আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। নগরীর পানি নামতে সময় লাগবে আরো কয়েকদিন।

অন্যদিকে, আসাম, সিকিম, গ্যাংটকে আগামী রোববার পর্যন্ত ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও যমুনার পানি আরো বাড়তে পারে। এর ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদী বন্যা হতে পারে।