চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বড়কুমিরাস্থ বাইপাস রোডের ইউনিটেক্স এর তুলার গোডাউনে লাগা আগুন সাড়ে ১৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দেয় সেনাবাহিনী। কিছুক্ষণ পর সেখানে নৌবাহিনীর একটি দল এসে যুক্ত হয়। মোট ২৮ টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। তবে এ দুর্ঘটনায় এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে  স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক বদিউল আলমকে প্রধান করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।  এর আগে ঘটনাস্থলে যান জেলা প্রশাসক।

কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে। এছাড়া সদস্য করা হয়েছে- চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), বিটিএমসির প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং বিটিএমইএর প্রতিনিধিকে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে,  ইউনিটেক্সের ফ্যাক্টরি তে ২,৭০০ টন তুলা মজুদ ছিল। এ দাহ্য পদার্থের কারণে অগ্নিকান্ড নির্বাপণ করা দুরুহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিট অগ্নি নির্বাপণে কাজ করছে। এছাড়া নৌ বাহিনী ও বিমান বাহিনীর ফায়ার ফাইটিং টিমও দুর্ঘটনা স্থলে এসেছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকার ওই গোডাউনে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, সকাল দশটা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমাদের ৫ টি ইউনিট ঘটনাস্থলে অগ্নিকাণ্ড নির্বাপনে কাজ করছে । বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে ১৮ টি ইউনিট কাজ করছে।

এর আগে, গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেড নামে কারখানায় বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ১১ মার্চ পর্যন্ত সাতজন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

এছাড়া গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় অবস্থিত বিএম ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এরপর টানা ৮৬ ঘণ্টা আগুন জ্বলতে থাকে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই দুর্ঘটনায় আশপাশে থাকা ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও শ্রমিকসহ ৫১ জন নিহত হন। এছাড়া আহত হন প্রায় দুই শতাধিক। পাশাপাশি ১৫৬টি আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।