উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছেই থাকছে। সংবিধানের ষোলতম সংশোধনী অবৈধ করে দেয়া আপিল বিভাগের রায় পুনবির্বেচনার আবেদন নিস্পত্তি করে সংবিধানের এ সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদ পুরোটাই বহাল করেছেন আপিল বিভাগ। সংবিধান সংশোধন করে আওয়ামী লীগ সরকার বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে দিয়েছিল।
বহুল আলোচিত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনটি আট বছর পর নিস্পত্তি হয়েছে।
২০১৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের করা এই রিভিউ আবেদনটি এতদিন শুনানির অপেক্ষায় ছিল। অনেকবার কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে আজ রোববার রিভিউ আবেদনটির শুনানি হয়। শুনানি শেষে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার আপিল বিভাগের রায় বহাল রেখে পুনর্বিবেচনার আবেদন নিষ্পত্তি করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছেই থাকবে। এই রায়ের মধ্যদিয়ে রাজনীতি ও দুর্বৃত্তায়ন থেকে বিচার বিভাগ বেরিয়ে আসলো বলেও মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
১৯৭২ সালে দেশের প্রথম সংবিধানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে দেয়া হয়। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। সবশেষ ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আবার সংসদের কাছে দিয়েছিল। সংবিধানের এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট মামলা করেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। শুনানি শেষে হাইকোর্ট ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছিল ২০১৬ সালে। আওয়ামী লীগ সরকার আপিল করলে তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল রেখেছিল।