নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা কোনো আপস করবো না। শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি দিচ্ছি। সুষ্ঠু নির্বাচন না করতে পারলে আমরা দায়িত্ব থেকে সরে যাবো। আজ (বৃহস্পতিবার) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমাদের কম্প্রোমাইজ করতে হলে এ চেয়ারে দেখবেন না। আমরা যে কাজের জন্য শপথ করেছি সেটা যদি না-ই করতে পারি তাহলে এই চেয়ারে থাকব কেন? আমাদের কমিশনে যারা আছি সকলের মনোভাব একইরকম। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব না এটা বিশ্বাস করি না। প্রয়োজনে দায়িত্ব থেকে সরে যাব। দেশি-বিদেশি কেউ কোনো চাপ দেয় না।
দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হবে না, এ ধারণা ভাঙার দায়িত্ব কার? জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, এখানে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। এটা রাজনৈতিক সমস্যা। রাজনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। এ বিষয়টিতে আমাদের কিছু করার নেই। সংবিধানও সেই দায়িত্ব আমাদের দেয়নি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তারা যেন স্বাধীনভাবে প্রচার করতে পারেন, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের ইচ্ছেমত পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, ভোট গণনা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, নির্বাচনের ফলে যাতে ভোটারদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে, সেসব বিষয় নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি আরো বলেন, আমরা সে দায়িত্ব পালনের প্রতি শতভাগ অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছি। আমরা সেটা করব। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি, যে ধরনের সরকারই থাকুক না কেন বর্তমান ইসি শতভাগ সৎ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে।
দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ভোট করা সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিশন চাইলে সেটা সম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই প্রায় দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। এটা নির্ভর করে নির্বাচন কমিশন কতটা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে। আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি এবং সেটা আমাদের ইচ্ছা আছে, অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। অতীতে কেন পারেনি সেটা অতীতের কমিশন বলতে পারবে। আগের কমিশন আর বর্তমান কমিশনের লোক ভিন্ন। তাদের আচরণের সঙ্গে এদের আচরণ মিলবে না।
সংকট দূর করার জন্য সংলাপের দায়িত্ব কে নেবে জানতে চাইলে ইসি বলেন, সংবিধান কি সেই দায়িত্ব আমাদের দিয়েছে? আমাদের বিভিন্ন অংশীজন, সুশীল সমাজের মতামত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া আছে। এখন আর হচ্ছে না। হয়ত পরবর্তীতে হতে পারে। সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। আবার কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে।
প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ রাখার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গাইবান্ধা উপ-নির্বাচন তারা বড় উদাহরণ। প্রশাসনে যারা কাজ করেছিলেন, যাদের গাফিলতি পাওয়া গেছে বা যারা অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি এবং সেটা মনিটরিং করছি।