যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হারিকেন ইয়ান। এ পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ঘূর্ণিঝড়কবলিত এলাকা থেকে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। তাদের মধ্যে সাতজন চার্লট কাউন্টিতে। বাকীরা সারাসোটা এবং ভলুসিয়ার। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল পর্যন্ত ফ্লোরিডায় ২৩ লাখের মতো বাসিন্দা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিলেন বলেও জানান বিদ্যুুৎ বিভাগ।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইয়ান ফ্লোরিডার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির কর্মকর্তাদের একটি ব্রিফিংয়ের পর বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা এখনো অস্পষ্ট, কিন্তু আমরা প্রাথমিকভাবে বড় ধরনের প্রাণহানি হতে পারে বলে শুনছি’।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে, ঝড়টি চার্লসটনের দক্ষিণে ছিল এবং ১০ মাইল বেগে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।ক্যাটেগরি ৪-র এই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রচণ্ড বাতাস এবং মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছে রাজ্যটি। উদ্ধারকর্মীদের আশঙ্কা, সময়ের সাথে বাড়তে পারে প্রাণহানি।

একদিনেই বদলে গিয়েছে গোটা শহরের চিত্র। আগের দিনই যেখানে সুন্দর করে সাজানো ছিল গোটা শহর, সেখানে আজ শুধুই পড়ে রয়েছে বাড়ি-ঘরের ধ্বংসাবশেষ। হারিকেন ইয়ানের প্রভাবে কার্যত ডুবে আছে গোটা ফ্লেরিডা, জেটিতে দাঁড়িয়ে থাকা অধিকাংশ নৌকাই ডুবে গেছে। ঝড়ের প্রভাবে উপড়ে পরেছে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে অধিকাংশ এলাকা। ফ্লোরিডায় সানিবেল কজওয়ে ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কায়ো কোস্টা দ্বীপের অধিকাংশ জায়গাই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে জর্জিয়া, উত্তর ক্যারোলিনাতেও। ফ্লোরিডায় ধ্বংসলীলা চালানোর পর আটলান্টিক সাগরের উপর দিয়ে প্রভাবিত হওয়ায়, ঘূর্ণিঝড়ের ফের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। দক্ষিণ ক্যারোলিনায় ল্যান্ডফল করার সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার থাকবে। ইতিমধ্যেই ক্যারোলিনায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রায় ৪ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে বন্যার সম্ভাবনা থাকায়, যারা নিচু অঞ্চলে বসবাস করেন, তাদের উচু কোনও স্থানে আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।