প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার একটি আদালত। রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত তিন মামলার অভিযোগ পত্র আমলে গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক।

আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

পরোয়ানা জারি হওয়া অপর আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী , মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ। শেষের দুইজন তদন্তে প্রাপ্ত আসামি।

দুদক দাবি করেছে, টিউলিপের চাপের পর রাজধানীর উত্তর-পূর্বে পূর্বাচল নিউ টাউনে ৬২১৩ একর জমির আবাসিক প্রকল্পে টিউলিপের মা ও দুই ভাইবোনের নামে একটি করে প্লট বরাদ্দ দেন শেখ হাসিনা।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে, টিউলিপ সিদ্দিক পলাতক আসামি হিসেবে পরিগণিত হবেন এবং বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তার প্রত্যার্পণ দাবি করতে পারবে, যাতে তাকে নিজ দেশে এনে আদালতের মুখোমুখি করা যায়।

এই মামলায় মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, যার মধ্যে শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবারের ছয়জন সদস্য রয়েছেন।

টিউলিপ সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে। তবে তিনি ব্রিটিশ নাগরিক। শেখ হাসিনার পতনের আগে তিনি যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু ফ্ল্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে জানুয়ারিতে সিটি মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয় তাকে। দুদক তার বিরুদ্ধে প্রথম দুর্নীতি তদন্ত শুরু করলে, সেখানে অভিযোগ ছিল, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশে রাশিয়া নির্মিত একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন।

অবশ্য টিউলিপ সিদ্দিক এই অভিযোগগুলোও অস্বীকার করেছেন।