হুইলচেয়ার নিয়ে রেস্তোরাঁর ভেতরে ঢুকলে অন্য অতিথিদের অসুবিধা হবে। এই যুক্তিতে ভারতের রাজধানী দিল্লির পার্শ্ববর্তী গুরগাঁওয়ের একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁয় ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী এক তরুণী। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এদিকে রেস্টুরেন্টে ঢুকতে না দেওয়ার ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেই তা ভাইরাল হয়েছে। সৃষ্টি পান্ডে নামে ওই অভিযোগকারী তরুণী সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টুইটারে দেওয়া এক দীর্ঘ বার্তায় গোটা বিষয়টি তুলে ধরেছেন। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে গুরগাঁওয়ের রাস্তা নামের একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁয়।

ভুক্তভোগী তরুণী সৃষ্টির অভিযোগ, ‘আমি আমার বন্ধু ও তার পরিবারের সঙ্গে গত শুক্রবার রাতে গুরগাঁও রাস্তায় গিয়েছিলাম। অনেকদিন পর বেরিয়েছিলাম আমি। ভেবেছিলাম খুব আনন্দ করবো। আমার বন্ধুর দাদা আমাদের চারজনের জন্য টেবিল বুকিং করতে চান। তবে ডেস্কে থাকা স্টাফ দু’বার দাদাকে এড়িয়ে যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করার পর রেস্টুরেন্টর কর্মী বলেন, হুইলচেয়ার ভেতরে যাবে না। আমরা প্রথমে ভাবি, হয়তো ঢুকতে অসুবিধা হওয়ার কথা বলছেন তিনি। পরে দেখলাম- বিষয়টা আলাদা। আমরা বললাম, আমরা ব্যবস্থা করে নেব, আপনি শুধু আমাদের একটি টেবিল দিন। তখন তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, ভেতরে অতিথিরা বিরক্ত হবেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের ঢুকতে দেননি তিনি। আমরা হতবাক হয়ে যাই।’

এই ঘটনার পরই শোরগোল পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। গুরুগ্রামের ডিএলএফ সাইবারহাবে অবস্থিত এই রাস্তা নামের রেস্তোরাঁটি পরে ক্ষমাও চেয়েছে সৃষ্টির কাছে এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।

এছাড়া রেস্তোরাঁর মালিক ও পার্টনার গৌমতেশ সিং ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চেয়ে টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আমি এমন খারাপ অভিজ্ঞতার জন্য আগে গোটা টিমের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি। আমাদের কোনো কর্মী অপরাধ করে থাকলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এই ঘটনার পর গুরুগ্রামের পুলিশও সৃষ্টির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। টুইটারে আপাতত ভাইরাল হয়েছে এমন অদ্ভুত ঘটনা। অভিনেত্রী-পরিচালক পূজা ভাটও তীব্র নিন্দা করেছেন এই ঘটনার।

গত বছরও দিল্লির এক রেস্তোরাঁয় এক নারীকে শাড়ি পরার কারণে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেসময়ও শোরগোল ফেলেছিল সেই ঘটনা।