অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ওপর সরাসরি হামলাকারী ও হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেএমবি নেতা নূর মোহাম্মদ ওরফে শামীমকে গ্রেফতার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
মঙ্গলবার (৯ই এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় এটিইউর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া জুঁই রাজধানীর বারিধারায় এটিইউ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সোমবার (৮ই এপ্রিল) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এটিইউর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া জুঁই জানান, সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে তাকে ধরা হয়েছে। জেএমবি নেতা নূর মোহাম্মদ চাপাতি দিয়ে সরাসরি অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ঘাড়ে-গলায় কুপিয়ে রক্তাক্ত ও জখম অবস্থায় মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অধ্যাপক আজাদ জার্মানিতে মৃত্যুবরণ করেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের উপন্যাস ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ প্রকাশিত হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে বইমেলা থেকে বের হয়ে বাংলা একাডেমি ও টিএসসির মাঝামাঝি পৌঁছালে জঙ্গিরা হুমায়ুন আজাদকে ঘেরাও করে। ব্যাগ থেকে চাপাতি-ছুরি বের করে হুমায়ুন আজাদের ঘাড়, মাথা, মুখ, গলা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে। এরপর হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে সাধারণ লোকজনের সঙ্গে মিশে যায়। একপর্যায়ে ‘সরকার নারী’ (১৯৯২), ‘দ্বিতীয় লিঙ্গ’ (২০০১), ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ (২০০৩) গ্রন্থ তিনটিকে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে।
চিকিৎসার জন্য হুমায়ুন আজাদ প্রথমে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ও পরে থাইল্যান্ডে যান। জীবন রক্ষা পেলেও তিনি অনেকটা পঙ্গু হয়ে যান। এরপর জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা কাজ করার জন্য জার্মানির লেখকদের সংগঠন পেন ক্লাবের বৃত্তি নিয়ে ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট মিউনিখ গিয়ে পৌঁছান।