রাজধানীর মিরপুরে র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে রংপুর কেমিক্যাল লিমিটেডের অফিস সহকারী ফিরোজ তালুকদার ওরফে পলাশ হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালতে মামলাটির আবেদন করেন নিহতের স্ত্রী রেশমা সুলতানা। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন– সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল ও আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্যান্য আইনজীবী তথা এমিকাস কিউরিদের মতামত উপেক্ষা করে একতরফাভাবে তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তিনি আদালতের আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে দেশে অঘোষিত স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের যথেচ্ছভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা প্রয়োগের অনুমতি দেন। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা ও অন্যান্য আসামিরা যেনতেনভাবে গণমানুষের আকাঙ্খার বিরুদ্ধে জাল ভোট, মৃত ব্যক্তির ভোট নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন। এভাবে তারা মানুষের ওপর জুলুম, নির্যাতন ও বাক স্বাধীনতা খর্ব করাসহ খুন, গুম ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও নিষ্পেষণ অব্যাহত রাখেন।
আরও বলা হয়, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। সরকার হত্যা, গুম, গ্রেফতারের মাধ্যমে দমন-পীড়ন করলে আন্দোলনকারীরা সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে তাদের পাশে সার্বিক অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাত আসামিদের নির্দেশে পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ কতিপয় বিপথগামী সদস্য, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা দেশব্যাপী আন্দোলন দমনের জন্য ক্রাকডাউনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে গুলি করতে থাকে। ১৯ জুলাই বিকাল ৬টার দিকে ফিরোজ তালুকদার মিরপুর-১০ গোলচত্বর অতিক্রম করার সময় হেলিপক্টার থেকে ছোড়া র্যাবের গুলিতে বিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।