২ হাজার ১৭০ ভরি বা ২৫ কেজি সোনা নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়। তবে যে কেউ চাইলেই এই সোনা কিনতে পারবেন না। সনদধারী স্বর্ণের ব্যবসায়ীরা নিলামে অংশ নিতে পারলেও সাধারণ মানুষ অংশ নিতে পারবে না এই নিলামে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় চলতি মাসে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিলামে সোনা বিক্রির বিষয়টি জানিয়েছে।

জানা যায়, বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর অবৈধ বা চোরাচালানের সোনা জব্দ করে। জব্দ করা সেই সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকে। মামলার রায় সরকারের অনুকূলে গেলে পরে এসব সোনা নিলামে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী খাতে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি আর স্থায়ী খাতে রয়েছে ১৫৯ কেজি সোনা রয়েছে। এখন স্থায়ী খাত থেকে ২৫ কেজিসোনা বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বহু বছর পর বাংলাদেশ ব্যাংক সোনা বিক্রির নিলাম করতে যাচ্ছে বলে জানালেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) পরিচালক এনামুল হক খান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর মাত্র ২৫ কেজি সোনা নিলাম খুবই হতাশাজনক। কারণ, নিলাম তোলার মতো অনেক সোনা তাদের হাতে আছে। অল্প পরিমাণ সোনা বিক্রিতে বাজারে কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়বে না। তিনি আরও বলেন, ‘আইনি জটিলতার কারণে বৈধভাবে সোনা আমদানি হচ্ছে না। তবে প্রায়ই আমরা পত্র-পত্রিকায় অবৈধ সোনা জব্দ করার সংবাদ পাই। সেই সোনা বাংলাদেশে ব্যাংকের কাছে জমা থাকে। একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি সোনা নিলামে বিক্রি করত, তাহলে আমরা ব্যবসায়ীরা সোনার একটি উৎস পেতাম।’এনামুল হক খান বলেন, ‘মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক জব্দ করা সোনার নিলাম করতে পারে না। আর একেকটি মামলা নিষ্পত্তি হতে ১০-১২ বছর লেগে যায়। তাই অনেক দিন আগেই নতুন আইন করার দাবি করেছি আমরা। যাতে জব্দ করা সোনার দ্রæত নিলাম করা যায়। পরবর্তী সময়ে মামলায় যদি কোনো ব্যবসায়ী জিতে যান, তাহলে তাঁকে বাজারদরে সোনা কিনে দিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও ৯৯ শতাংশ মামলায় সরকারের জয় হয়।’

সোনা বিক্রির নিলাম কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, তার বিস্তারিত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে অনুযায়ী নিলামে অংশ নিতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স; টিআইএন সনদ; মূসক নিবন্ধন; বিআইএন সনদ; সোনা ক্রয়, মজুত ও সরবরাহের লাইসেন্স; সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যপদ; আর্থিক সচ্ছলতার বিষয়ে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সনদ; আয়কর পরিশোধের হালনাগাদ সনদ; আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত লিমিটেড কোম্পানি হলে কোম্পানির নিবন্ধন সনদ; মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন, আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন ও পরিচালকদের হালনাগাদ তালিকা জমা দিতে হবে।বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ১৪ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্তআগ্রহী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে দুই হাজার টাকা জমা (অফেরতযোগ্য) দিয়ে দরপত্র শিডিউল ক্রয় করতে পারবে। পরে সংস্থাটির কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করে নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্যদের একটি তালিকা করবে।