গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক বিমান হামলা ও গুলি বর্ষণে গত ২৪ ঘণ্টায় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৬ জন খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারান। একইসঙ্গে আহত হয়েছেন আরও তিন শতাধিক মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯৪ ফিলিস্তিনির মরদেহ এবং ৩৬৭ জন আহত ফিলিস্তিনিকে উপত্যকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এনিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ৬৬৭ জন এবং আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪ জনে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অনেক মরদেহ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছে, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।
এতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হতাহতদের মধ্যে মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন। আহত হয়েছেন আরও ৩২ জন।
এরআগে গতকাল বুধবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে জিএইচএফ-এর একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হুড়োহুড়িতে পদদলিত ও শ্বাসরোধে অন্তত ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৬ মে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তাদের খোলা চারটি ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর এই ‘মৃত্যুর ফাঁদে’ এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৮৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫ হাজার ৬৬৬ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়াও ৩৯ জন এখনো নিখোঁজ হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১১ সপ্তাহ ধরে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে অবরোধের পর আন্তর্জাতিক চাপে গত ২৬ মে জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় জিএইচএফ— ত্রাণ বিতরণ সংস্থা খোলার ঘোষণা দেয় ইসরায়েলি।
জাতিসংঘসহ অন্যান্য খাদ্য সংস্থা জিএইচএফর এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা বলছে, এই উদ্যোগ মানবিক নীতিমালা লঙ্ঘন করে এবং ত্রাণকে রাজনৈতিক ও সামরিক লক্ষ্য অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে।