সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর ৪৮ ঘণ্টায় দেশটির বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৪৮০টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে সিরিয়ার সামরিক সক্ষমতার প্রায় ৭০-৮০ শতাংশই বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দাবি করছে ইসরায়েল। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সিরিয়ার ১৫টি নৌযান, অস্ত্র উৎপাদন ক্ষেত্র, বিমান বিধ্বংসী ব্যাটারিসহ বিভিন্ন অবকাঠামোয় এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, সিরিয়ার নৌবাহিনীর ওপরও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। রাতভর এ হামলায় ব্যাপক সফলতা পাওয়ার দাবি করেন তিনি।
এর একদিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বাশার আল আসাদের শাসনের পতনকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তিনি এটিকে ‘নতুন এবং নাটকীয় অধ্যায়’ বলে উল্লেখ করেন।
নেতানিয়াহু বলেন, সিরিয়ার সরকারের পতন হলো আমাদের হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানকে আঘাতের প্রত্যক্ষ ফলাফল। অক্ষটি এখনো নিঃশেষ হয়ে যায়নি। তবে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম- আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা পরিবর্তন করছি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সিরিয়ায় বিমানবাহিনী ৪৮০টি হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫০টি হামলায় বিমানবিধ্বংসী ব্যাটারি, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, ফাইটার জেট, ট্যাঙ্ক এবং দামেস্ক, হোমস, টারতুস, লাতাকিয়া এবং পালমাইরা, পালমাইরাতে অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রকে নিশানা করা হয়েছে। এছাড়া বাকি হামলায় বাকি অস্ত্রের ডিপো, সামরিক কাঠামো, লঞ্চার এবং ফায়ারিং পজিশনকে নিশানা করা হয়েছে।
আইডিএফ জানিয়েছে, তারা সিরিয়ায় দুটি নৌঅবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে। এ সময় সেখানে ১৫টি নৌযান ছিল। এছাড়া সমুদ্র থেকে সমুদ্রে উৎক্ষেপণকারী বেশকিছু ক্ষেপণাস্ত্রও ধ্বংস করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা আসাদ সরকারের কৌশলগত সামরিক সক্ষমতার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ধ্বংস করেছে।
বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মাত্র ১২ দিনের ‘ঝোড়ো’ অভিযানে গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটে। আসাদ পালিয়ে মিত্র দেশ রাশিয়ায় আশ্রয় নেন। বাবা হাফিজ আল-আসাদ ও ছেলে বাশার আল-আসাদ মিলে টানা ৫৩ বছর সিরিয়া শাসন করেছেন। সর্বশেষ ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন বাশার।
এর মাধ্যমে দেশটির ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধ ও আসাদ পরিবারের ছয় দশকের স্বৈরশাসনের অবসান হয়। সিরিয়ার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে মধ্যপ্রাচ্যের মোড় ঘোরানো ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আসাদ সরকারের পতনের পর থেকেই সিরিয়ায় ব্যাপক হামলা শুরু করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।