এলিগ্যান্ট গ্রুপ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ ও আরো দু’জন কর্মীর বিরুদ্ধে ইস্যু করা গ্রেফতারি পরোয়ানা বাড্ডা থানায় পৌঁছেছে। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় করা প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় সম্প্রতি ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।

বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলো ভিক্টোরিয়া ফ্যাশন এক্সোসরিজ ইন্ডাস্ট্রি। মামলার অন্য দু’জন আসামী হচ্ছেন মার্চেন্ডাইজার মারুফুর রহমান ও মোঃ রুবেল।

অভিযুক্তরা বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রতারণার মাধ্যমে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে পরে বড় অংকের অর্ডার দিয়ে সেই পাওনা পরিশোধ না করে অর্থ আত্মসাতের সিন্ডিকেট পরিচালনা করে থাকে। অভিযুক্ত তানভীর এর নামে এর আগেও প্রতারণা ও জালিয়াতির বহু অভিযোগ এবং মামলাও রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিনের পর দিন একই ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে প্রতারক চক্রটি।

এর আগে বিগত ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ সালে তানভীরসহ বাকি আসামীদের আদালতে হাজির হবার আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক মোহাম্মদ জসিমের আদালত। পরবর্তীতে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ইং তারিখ দ্বিতীয়বার আদালত সুযোগ দেন আসামীদের। এদিন বাদী প্রতিষ্ঠান গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট ইস্যুর আবেদন করেন। অন্যদিকে সমন জারী এবং আসামীগণের অনুপস্থিতির জের ধরে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করেন আদালত।

ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশন লিঃ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নামে ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ইং তারিখ মামলা করেছিলো ভিক্টোরিয়া ফ্যাশন এক্সোসরিজ ইন্ডাস্ট্রিজ। এ সময় দীর্ঘ ব্যবসায়িক সম্পর্কের জের ধরে বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। দন্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় সি,আর মামলাটির শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের আদালত সি.আই.ডি বরাবর তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন।

তদন্তাদেশ পাওয়ার পর সি.আই.ডি বাদী ও অভিযুক্ত উভয় পক্ষের কথা ও প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বাদী পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে সি.আই.ডি। এরমধ্যেও কোনপ্রকার যোগাযোগ বা অর্থ পরিশোধের ইচ্ছাপোষণ করেনি অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান। বিগত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখ তদন্ত প্রতিবেদন দেখে সমন ইস্যু করে বিচারক মোহাম্মদ জসিমের আদালত ।এলিগ্যান্ট গ্রুপ এম.ডি’র বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা

এর আগে, অর্ডার করে বিপুল পরিমাণ পণ্য গ্রহণ এবং বকেয়া অর্থের দীর্ঘসূত্রীতার জের ধরে বারংবার তাগাদা দেয়া হলেও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ শুধু সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। বাদী প্রতিষ্ঠান ১৬ লক্ষ ০৫ হাজার একশত তেইশ টাকা পাওনা হওয়ায় দীর্ঘ দুই বছর অভিযুক্তদের আশ্বাসে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু একপর্যায়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে করে বাদী প্রতিষ্ঠান বড় ধরণের লোকসানে পড়ে যায়।

পরবর্তীতে ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখ যথা নিয়মে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান বাদী প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী। এতেও কোনরূপ সাড়া না পেয়ে ও সবধরণের যোগাযোগের চেষ্টা করে আদালতের শরণাপন্ন হয় ভিক্টোরিয়া ফ্যাশন এক্সোসরিজ ইন্ডাস্ট্রি ।

ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশন লিঃ মূলত এলিগ্যান্ট গ্রুপের সহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে তৈরী পোশাক শিল্পে ব্যবসায় করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন প্রতারক তানভীর আহমেদ। তিনি মেঘনা ব্যংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে বাড্ডা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, আদালতের নির্দেশ পালনে কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।