দেশের চারটি মোবাইল কোম্পানির কাছে সরকারের মোট ১৩ হাজার ৬৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।  মঙ্গলবার (০৭ই জুন) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার জানিয়েছেন এ তথ্য।

মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে বৃহৎ টেলিকম কোম্পানি গ্রামীণ ফোনের কাছে মোট পাওনা ছিল ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ টাকা। তারা ইতিমধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে, তাদের কাছে বর্তমানে বকেয়া রয়েছে ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ টাকা।

রবি আজিয়াটার কাছে পাওনা ছিল ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকা, ইতিমধ্যে কোম্পানিটি ১৩৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। তাদের কাছে বর্তমানে পাওনা রয়েছে ৭২৯ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকা। এছাড়া প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেডের কাছে মোট পাওনা রয়েছে ১২৮ কোটি ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৩ টাকা, আর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছে পাওনা আছে ১ হাজার ৬৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে সরকার এ চারটি কোম্পানির কাছে মোট ১৩ হাজার ৬৮ কোটি ৪২ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৪ টাকা পাবে।

মন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে গ্রামীণ ফোন, রবি আজিয়াটা এবং প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকমের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা বর্তমানে বিচারাধীন । টেলিটকের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবার জন্য অর্থমন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এখনো অর্থমন্ত্রণালয় থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি এবং এসওএফ বাবদ বকেয়া ৪৬ কোটি ৪ লাখ টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে ।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, টেলিটকের নেটওয়ার্ক সারাদেশব্যাপী সম্প্রসারণ তেমন একটা হয়নি।  সময়োপযোগী ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এটি সমৃদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালের মধ্যে সারাদেশে টেলিটকের নেটওয়ার্ক দেওয়া হবে।

গত ১০ বছরে অর্থাৎ ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশে মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি বেড়েছে বলে জানান মোস্তফা জব্বার। মন্ত্রী বলেন, যেখানে ২০১২ সালে  দেশে মোট মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৬৬ লাখ, সেখানে ২০২২ সালের  মে মাস পর্যন্ত  গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ কোটি ৩৪ লাখ। বর্তমানে ৩ কোটি ১৯ লাখ থ্রিজি গ্রাহক ও ৭ কোটি ৫৪ লাখ ফোরজি গ্রাহক রয়েছে। ২০১২ সালে  ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৮৯ লাখ , কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৪২ লাখে।