তিস্তা ও ধরলাসহ বিভিন্ন নদীতে পানি বাড়ায় লালমনিরহাটে ২০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নীলফামারীতে এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে তিস্তার পানি। রংপুরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। তবে পানি বাড়ছে মধ্যাঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে।
তিস্তা, ধরলা, রত্নাই,সতীসহ লালমনিরহাটে বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়ায় লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বাড়িঘরে পানি থাকায় বন্যার্তদের ভোগান্তি ও দুর্ভোগ বেড়েছে। পানিবন্দি রয়েছে জেলার ২০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ। তাছাড়াও পানিতে তলিয়ে রয়েছে ৮শ হেক্টর জমির পাকা ধান, বীজতলা পাটসহ ফসলের খেত।
রংপুর অঞ্চলের সব নদ-নদীগুলোর পানি কমছে। তবে জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচর এখনো তলিয়ে রয়েছে। কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা।
ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে। এতে তিস্তা অববাহিকার চর ও গ্রামগুলো তলিয়ে গেছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, কৈইমারী, শৌলমারী ইউনিয়নের তিস্তার তীরবর্তী ও লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।
এদিকে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জের দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চল দ্রুত প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনার চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। ফলে যমুনার পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, ইছামতিসহ চলনবিলের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা।
সোমবার (২০ জুন) সকালে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান জানান, পাহাড়ি ঢলে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ২২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ১৪ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।