প্রতীক্ষার পালা শেষ হলো। স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (শনিবার) বেলা ১২টায় বহুল আকাঙ্খিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করে তিনি বলেন, এই সেতু বাঙ্গলীর সাহস, গর্ব, সক্ষমতা, আত্মমর্যাদা আর শক্তির প্রতীক। সেতু নির্মাণে দেশবাসীর সাহস যোগানো ও সহযোগীতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জনগণের শক্তিই বড় শক্তি।
হার না মানা বাঙ্গালীর ইতিহাসে যুক্ত হলো আরো একটি নতুন পালক। স্পর্ধিত বাঙ্গালীর মাথা না নোয়াবার প্রতীক স্বপ্নের পদ্মা সেতু। শত প্রতিকুলতাকে অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নিজ হাতে পদ্মাসেতুর দুয়ার খুলে দিলেন। তাই তার আয়োজনাটাও ছিলো জাকজমকপূর্ণ।
শনিবার দশটায় হেলিকপ্টারে করে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ততক্ষণে আমন্ত্রিত অতিথি এবং দলীয় নেতাকর্মীতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে সভাস্থল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সেতু শুধুমাত্র কংক্রিটের একটি সেতু নয়, এই সেতু বাঙ্গালীর আবেগ, সৃজনশীলতা আর প্রত্যয়ের প্রতীক। দেশি-বিদেশী শতষড়যন্ত্র মোবাবেলা করে এই সেতু নির্মাণ করতে হয়েছে। দেশের জনগনের সাহসই তার এগিয়ে চলার প্রেরণা বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
পদ্মাসেতু নির্মাণ সহজ ছিলো না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙ্গালী বীরের জাতি, শতপ্রতিকূলতার মাঝেও তারা বার বার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই সেতু নির্মাণ করেও তারা সমগ্র বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছে দেশের অর্থনীতি ধ্বসে পরেনি বরং আত্মমর্যাদার সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
দেশের কিছু মানুষ এই সেতু নির্মাণের বিরোধীতা করেছে যা জাতির জন্য লজ্জাজনক উলেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, আত্মবিশ্বাস বাড়বে। পদ্মসেতু নির্মাণে মাণের দিকে কোন আপস হয়নি বরং এই সেতু বিশ্বের প্রকৌশল বিদ্যার জন্য অনন্য এক নিদর্শন হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, এই সেতুর খুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং মানুষের জীবনমান উন্নত হবে।
উদ্বোধনী বক্তব্যের পরে তিনি মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী ফলক ও পিতা-কন্যার নামে একটি ম্যুরাল উন্মোচন করেন। এর পর টোল দিয়ে প্রথম যাত্রী হিসেবে গাড়ি নিয়ে সেতুতে উঠেন। সেতুর মাঝামাঝি গিয়ে সেখানে একটি মঞ্চে দাঁড়ান। সশস্ত্র বাহিনীর বিমান মহড়া পরিদর্শন করেন। এরপর সেতু পার হয়ে অপর পান্ত জাজিরায় পৌঁছান। সেখানে পদ্মাসেতুর আরো একটি ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।