অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) খন্দকার লাবণী (৪০) ও কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের একইদিনে মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমেছেন গোয়েন্দারা। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, পৃথক দু’টি ঘটনা হলেও এর মধ্যে যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা বেশি। কারণ নিহত পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান এর আগে খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এডিসি খন্দকার লাবণীর দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মাত্র দেড় মাস আগে মাহমুদুল মাগুরায় বদলী হয়ে আসেন।

আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রাম থেকে লাবনীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কাছাকাছি সময়ে মাগুরা সদরে ব্যারাকের ছাদে পাওয়া যায় ২৫ বছর বয়সী মাহামুদুলের গুলিবিদ্ধ মরদেহ। শ্রীপুর উপজেলার বড়ালিদাহ গ্রামের শফিকুল আজমের মেয়ে লাবনী খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার। সারঙ্গদিয়া গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তার গলায় ওড়না পেঁচানো মরদেহ পাওয়া যায়।

পরে কনস্টেবল মাহামুদুলের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায় মাগুরা শহরে পুলিশ লাইন্স ব্যরাকের চার তলার ছাদে। তিনি সরকারি রাইফেল দিয়ে নিজের মাথায় গুলি করে ‘আত্মহত্যা’ করেন বলে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা সদরের এজাজুল হকের ছেলে মাহমুদুল আগে ছিলেন খুলনা মহানগর পুলিশে। দেড় মাস আগে তিনি বদলি হয়ে মাগুরায় আসেন। মাহমুদুল খুলনায় এডিসি লাবনী আক্তারের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

একই দিনে তাদের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘দু’জনেই আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে কোনো যোগসূত্র আমাদের জানা নেই।”

এদিকে লাবনীর মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৬নং কাদিরপাড়া ইউনিয়নের বরালিদহ গ্রামের খন্দকার শফিকুল আজমের মেয়ে। শ্বশুরবাড়ি ফরিদপুর শহরে। তার স্বামী তারেক আবদুল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সহকারী পরিচালক (এডি)। তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে রয়েছেন। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহত লাবণীর বাবা খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, গত ১৭ই জুলাই এক সপ্তাহের ছুটিতে লাবণী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গতকাল বুধবার লাবণী শ্রীপুর ইউনিয়নের সারঙ্গ দিয়া গ্রামে নানার বাড়িতে অবস্থান করছিল। গভীর রাতে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।

তার দাবি, স্বামীর সঙ্গে কলহের জেরে তার মেয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। তবে স্বামীর সঙ্গে কি নিয়ে সমস্যা ছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য তার কাছে মেলেনি।

আত্মহত্যাকারী পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে লাবণীর অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল কিনা- জানতে চাইলে খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, এ রকম কোনো বিষয় আমরা আজ পর্যন্ত শুনিনি।