সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তিতে (স্টাফ লেভেল) পৌঁছেছে দেশটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার (পহেলা সেপ্টেম্বর) ওই চুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।
করোনা অতিমারি, জাতীয় অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের অদক্ষতা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের জন্য খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি প্রায় ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। এক বছর আগের তুলনায় খাদ্যের দাম ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য প্রধান বৈশ্বিক মুদ্রার বিপরীতে শ্রীলঙ্কার রুপির মূল্য ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। ভয়াবহ এই অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থার কাছে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা চেয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ রাষ্ট।
প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছানোয় শ্রীলঙ্কা কত পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে পেতে যাচ্ছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করছে। এই প্রতিনিধি দলের অবস্থানের মেয়াদ আরও একদিন বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। বৃহস্পতিবার তাদের উপস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আইএমএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকায় কলম্বোতে আইএমএফ মিশনের অবস্থানের সময় আরও একদিন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তবে আইএমএফের সঙ্গে প্রাথমিক এই চুক্তির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও কোনও সাড়া পায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। যদিও শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে মঙ্গলবার সংসদে বাজেট পেশের সময় বলেছেন, আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আইএমএফের স্টাফ-লেভেলের চুক্তি সাধারণত প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং নির্বাহী বোর্ডের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এরপরই কোনও দেশ আইএমএফের কাছে চাওয়া ঋণ সহায়তা পেয়ে থাকে।