বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজও বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীতে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন কর্মজীবীরা। উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টির পাশাপাশি বইছে ঝড়ো হাওয়া। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতায় থাকায় প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল। কোথাও কোথাও পানি উঠেছে শহরতলীতেও।
এই বৃষ্টি তাপমাত্রা কমিয়ে শান্তি এনে দিলেও স্বস্তি ছিল না রাজধানীর রাস্তায়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভারতের মধ্যপ্রদেশে সৃষ্ট স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে দেশের বেশির ভাগ স্থানে।
রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা, হাতিরঝিল, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন পথচারীরা। বাসা থেকে যারা ছাতা নিয়ে বেরিয়েছেন তারা কিছুটা রক্ষা পেলেও অনেককে ভিজতে হয়েছে। সড়কে পর্যাপ্ত রিকশা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ।
তারা বাস বা অটোরিকশার অপেক্ষায় রাস্তায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন। কেউ কেউ গাড়িতে উঠতে পারলেও বাকিরা হেঁটেই গন্তব্যে রওনা হন। সড়কে পানি জমে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুুর প্রভাবে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরের মধ্যে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটার বা তারও বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। তাই সমুদ্রবন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। এ অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিলা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।