নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় রাখতে চেষ্টা চালানোর কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে ‘প্রতিনিয়ত আলোচনা করার’ প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণ সাথে থাকলে যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব। জনগণই সরকারের মূল শক্তি। তাদের সাথে নিয়ে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে ওঠাও সম্ভব বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় ৭ হাজার ১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আরও সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সেই জনগণকে কাজে লাগাতে হবে। যেভাবে আমরা করোনা মোকবিলা করেছি, ঠিক একইভাবে যুদ্ধের সময় যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে, যে ভয়াবহতা দেখা দিচ্ছে এটা থেকে আমাদের দেশকে মুক্ত করতে হবে’।

প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে, তার মধ্যেও দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার আওতার মধ্যে যাতে থাকে সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তার জন্য যা যা করণীয় সেটা আমরা করব। করোনা অতিমারি থেকে ঘুরে না দাঁড়াতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে যে মন্দা দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ঝড়ঝাপ্টা এগুলো আমাদের আছেই, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, এগুলো আমাদের সবসময় মোকাবিলা করতে হয়, করতে হবে। সেটা আমরা করতে পারব। যতক্ষণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, জনগণই হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। জনগণ যতক্ষণ আমাদের সঙ্গে আছে, আমাদের চিন্তার কিছু নেই।’

জনগণের সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগানোর তাগিদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সেই জনগণকে কাজে লাগাতে হবে। যেভাবে আমরা করোনা মোকবিলা করেছি, ঠিক সেই একইভাবে যুদ্ধের সময় যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে, যে ভয়াবহতা দেখা দিচ্ছে এটা থেকে আমাদের দেশকে মুক্ত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তত যে অর্জনটা আমরা করেছি, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, এই মর্যাদাটা ধরে রেখে বাস্তবায়ন করে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। যাতে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’

উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্টদের আবারও স্পষ্ট নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের যে প্রকল্পগুলো আমরা হাতে নিচ্ছি, প্রত্যেকটা প্রকল্প গ্রহণের আগে আমাদের কাছে অনেক ধরনের প্রস্তাব আসে। অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাও প্রস্তাব নিয়ে আসে। সেখানে আমাদের যেটা করতে হবে, কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আমার দেশের মানুষের উপকার হবে, তার থেকে আমরা কিছু অর্জন করতে পারব, অহেতুক একটা প্রকল্প নিয়ে অনেকগুলো টাকা পেলাম দেখে সেখানে ঝাঁপ দেয়ার দরকার নেই।’