এবার উজ্জীবিত ফুটবল খেলে তাক লাগিয়ে দিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। যদিও প্রথমার্ধে একের পর এক সেভ এর উগো লরিস তাদের হতাশ করেছিল কিন্তু বিরতির পর ভেঙে যায় সেই দেয়াল। প্রিমিয়ার লিগে জয়ের পথে ফিরল এরিক টেন হাগের দল।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বুধবার রাতে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে ম্যানইউ। ফ্রেদ দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর চমৎকার গোলে ব্যবধান বাড়ান বরুনো। এক ম্যাচ পর লিগে জয়ের স্বাদ পেল ইউনাইটেড। গত রাউন্ডে ঘরের মাঠেই নিউক্যাসল ইউনাইটেডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল দলটি।
এবছরের মার্চে লিগে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ফিরতি দেখায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হ্যাটট্রিক করা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে এই ম্যাচে বেঞ্চে রাখেন টেন হাগ। পর্তুগিজ তারকাকে শেষ পর্যন্ত বদলি হিসেবেও নামাননি তিনি। ৮৯তম মিনিটে টানেলে ঢুকতে দেখা যায় পাঁচবারের বর্ষসেরা এই ফুটবলারকে।
শুরু থেকে টটেনহ্যামকে চেপে ধরে ইউনাইটেড। সপ্তম মিনিটে প্রথম শট নেয় তারা। ৩০ গজ দূর থেকে আন্তোনির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক লরিস। পরের মিনিটে দূর থেকে ফ্রেদের শটে লাফিয়ে বল এক হাতে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান তিনি।
দশম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আন্তোনির বাঁকানো শটে বল পোস্টের বাইরের দিকে লেগে চলে যায়। ২১তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান রোনালদোর জায়গায় একাদশে ফেরা মার্কাস র্যাশফোর্ড।
ফ্রেদের দারুণ থ্রো বলে ইংলিশ ফরোয়ার্ডের শট ব্যর্থ করে দেন লরিস। এক মিনিট পর ফের্নান্দেসের ফ্রি-কিকও ফিরিয়ে দেন এই ফরাসি গোলরক্ষক। একটু পর আরেকটি দুর্দান্ত সেভ করেন লরিস। এবার লুক শর জোরাল ভলি ফিরিয়ে জাল অক্ষত রাখেন তিনি। ২৮তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে কাসেমিরোর বুলেট গতির শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়।
প্রথম আধাঘণ্টায় গোলের জন্য ইউনাইটেড শট নেয় মোট ১৪টি, যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে আর সবগুলোই সেভ করেন লরিস।
প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে প্রথম ইউনাইটেড গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারে টটেনহ্যাম। দুরূহ কোণ থেকে হ্যারি কেইনের শট ফিরিয়ে দেন দাভিদ দে হেয়া। বিরতির আগে ইউনাইটেড যেখানে গোলের জন্য ১৯টি শট নিয়ে পাঁচটি লক্ষ্যে রাখে, সেখানে টটেনহ্যামের পাঁচ শটের একটি লক্ষ্যে ছিল।
একই ধারা ধরে রেখে দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। জ্যাডন স্যানচো বক্সের ভেতর থেকে বাইরে পাস দেন ফ্রেদকে। এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের শটে বল টটেনহ্যামের ডিফেন্ডার বেন ডেভিসের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না লরিসের।
৪৯তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ পেয়ে যান র্যাশফোর্ড। বক্সের ভেতর থেকে তার বাঁ পায়ের শট হাত বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন লরিস। পাল্টা আক্রমণে ৬৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে স্বাগতিকরা। বক্সে ফ্রেদের শট টটেনহ্যামের এরিক ডায়ারের পায়ে লেগে ব্যর্থ হওয়ার পর চমৎকার শটে জালে পাঠান ফের্নান্দেস।
৭৪তম মিনিটে আবারও সুযোগ হারান র্যাশফোর্ড। আরেকটি দুর্দান্ত সেভ করেন লরিস। ৮১তম মিনিটে ফের্নান্দেস আবার জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি। ব্যবধানও তাই আর বাড়েনি। ম্যাচে ইউনাইটেডের দাপুটে পারফরম্যান্সের চিত্র পরিসংখ্যানেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। গোলের জন্য তাদের ২৮ শটের ১০টি ছিল লক্ষ্যে। আর টটেনহ্যামের ৯ শটের ২টি লক্ষ্যে ছিল।
১০ ম্যাচে ছয় জয় ও এক ড্রয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে ইউনাইটেড। এক ম্যাচ বেশি খেলে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে টটেনহ্যাম। আরেক ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করা চেলসি ১০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে।
ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতা লিভারপুল ১৬ পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে সপ্তম স্থানে আছে। ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি দুইয়ে, ২৭ পয়েন্ট নিয়ে আর্সেনাল শীর্ষে আছে।