টানা দু’দিনের ধর্মঘট শেষে খুলনায় বাস ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। এতে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে টার্মিনালে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় যাত্রীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
শনিবার (২২শে অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে ১৬টি রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। দূরপাল্লার গাড়িও ছাড়ছে। পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ ঘাট থেকে কয়রাসহ ৩টি রুটে চলছে লঞ্চ।
জানা গেছে, গতকাল বিকাল থেকে ঘাটে ট্রলার চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকে গণপরিবহন ও লঞ্চ বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যায় বলে দাবি করা হয়েছে। স্বাভাবিক হয়েছে খুলনার সড়কপথ।
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, ‘মালিকরা দুই দিন পরিবহন ধর্মঘট ডাকেন। সেই ধর্মঘটে শ্রমিকরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। গত শুক্রবার সকালে শুরু হওয়া এই ধর্মঘট চলে শনিবার দুপুর পর্যন্ত। দুপুরে পরিবহন চলাচল শুরু হয়। এখন বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
রূপসা ঘাট মাঝি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ ব্যাপারী বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মাঝি সমিতি, পরিবহন সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হয়। বৈঠকে আমাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হলে সন্ধ্যা থেকে রূপসা ঘাট থেকে নৌকা ও ট্রলার চলাচল শুরু হয়। এখন যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।’
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বেতন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে আমরা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছিলাম। শুক্রবার রাতে মালিক-শ্রমিক পক্ষের বৈঠকে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে শনিবার সকাল থেকে লঞ্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। তবে গতকাল সকালে যাত্রী না থাকায় দুটি লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চারটি লঞ্চ বিভিন্ন রুটে ছেড়ে গেছে।’
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এস এম শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করে বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা যাতে খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশে আসতে না পারেন সেজন্য এসব পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। তবে কোনও বাধাই নেতা-কর্মীদের সমাবেশে আসা ঠেকাতে পারেনি। সব বাধা অতিক্রম করে নেতা-কর্মীরা সমাবেশ সফল করেছেন। খুলনার সমাবেশে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে। সমাবেশ শেষ এখন তারা আবার সব চালু করেছে। এই ধর্মঘটে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে।’
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতা-কর্মী হত্যা, হামলা এবং মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের পর শনিবার তৃতীয় গণসমাবেশ হয় বিভাগীয় শহর খুলনায়।