দেশে দুর্ভিক্ষ হলে এর দায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এর আগে ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলেও দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। মানুষ খাবার খেতে না পেরে রাস্তায় পড়ে ছিল। এখন আবার সেই অবস্থা ফিরে এসেছে। ১০ কেজির চাল খাওয়াতে চেয়ে আওয়ামী লীগ এখন ৯০ টাকার চাল খাওয়াচ্ছে। চিনির দামও বেড়েছে। শাকসবজিও মানুষ কিনতে পারছে না। এটা দুর্ভিক্ষের লক্ষন।
শনিবার সকাল থেকেই বিএনপি’র নেতাকর্মীদের এমন মিছিল আসতে থাকে রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ অভিমুখে। দুদিন ধরে পরিবহন ধর্মঘট থাকলেও যে যেভাবে পেরেছেন উপস্থিত হয়েছেন সমাবেশে। তাদের মিছিল-স্লোগানে মুখরিত কালেক্টরেট মাঠসহ আশপাশের এলাকা। তবে, পথে পথে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।
জ্বালানীতেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করার কথা জানান বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশে বিকেলে বক্তব্য দেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, যেদিকে তাকাই শুধু চুরি আর চুরি। রাস্তাঘাট, ব্রিজ করতেও চুরি হয়। বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা এমনকী আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নিতেও টাকা দিতে হয়। এই সরকার সব খেয়ে ফেলেছে কিছু বাকি রাখেনি। এই সরকার সর্বভুক সরকারে পরিণত হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরকার মিথ্যা মামলায় আটকে রেখেছে দাবি করে ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলীয় ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আলেম-ওলামাদেরও হয়রানি করতে ছাড়েনি। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যাবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন কঠিন দুঃসময়। দেশে দুর্ভিক্ষ হলে মানুষ কোথায় যাবে? দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার। ১৯৭৪ সালেও শেখ হাসিনার বাবার আমলে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। মানুষ না খেয়ে মারা গেছে।
নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াতে চেয়েছিল এই সরকার। এখন চালের কেজি ৬০ টাকা। ডাল, ডিম, চিনিসহ শাক-সবজির দামও আকাশচুম্বী। এসময় সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, কিন্তু আমরা দেখছি আপনারা চিতল মাছ খান। বিদেশে যান। এসি রুমে থাকেন। শুধু মুখে বড় বড় কথা বলেন আপনারা।
গণসমাবেশের প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এছাড়া বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ মাঠে জড়ো হতে থাকেন বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা।