‘কর্ণফুলী ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোন’সহ ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার (২০শে নভেম্বর) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধন করেন তিনি।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুনের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ওপর ভিডিও প্রদর্শন শেষে চট্টগ্রাম-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান রহমান বক্তব্য রাখেন।
কর্ণফুলী ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোন কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণে বাদলপুরা ও শাহ মীরপুর মৌজায় অবস্থিত। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া জমিতে এটি প্রতিষ্ঠা করে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স।
ড্রাইডকের নির্মাণ ব্যয় হিসেবে বিশ্বব্যাংক ৮শ কোটি টাকা সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করেছে। এই ড্রাইডকটি লম্বায় ২৮৫ মিটার এবং প্রস্থে ৫৬ মিটার। ডকে ১ লাখ টন ওজনের জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত করা সম্ভব। ১২শ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি ড্রাইডকের নির্মাণ কাজও চলছে।
কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারায় ‘কর্ণফুলী ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোনে’র অধীনে দুটি জেটি নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। জেটিতে আমদানি পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে শুরু করেছে এবং নিয়মিত চলছে লোডিং-আনলোডিং কার্যক্রম। যা চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্যবাহী জাহাজের জট কমানো তথা উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে বনির্নোঙ্গরে জাহাজের অপেক্ষার সময় হ্রাস পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।
এই জেটিতে ১৭০ মিটার লম্বা দুটি জাহাজ এক সঙ্গে ভিড়তে এবং ১০ থেকে ১২টি জাহাজ একসঙ্গে পণ্য খালাস ও কম করে হলেও দৈনিক ৬ হাজার টন ও মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টন পণ্য খালাস করতে পারে।
এই ইকোনমিক জোনের আওতায় আরও দুটি জেটি ও কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ২০ দশমিক ৯৮ একর জমি বেজার মাধ্যমে লিজ নেওয়াসহ কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের নিজস্ব জমিতেও আরও দুটি জেটি নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন একযোগে মোট আটটি ভেন্যু থেকে অনুষ্ঠিত হয়। ভেন্যুগুলো হলো— গণভবন, ঢাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর (মিরসরাই, চট্টগ্রাম), শ্রহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল (শ্রীহট্ট, মৌলভীবাজার), কর্ণফুলী ড্রাইডক এসইজেড (আনোয়ারা, চট্টগ্রাম), মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্থনৈতিক অঞ্চল (সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ), জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল (জামালপুর সদর), সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক (সাবরাং, কক্সবাজার) ও হোসেন্দি অর্থনৈতিক অঞ্চল (গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ)।
অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে শেষ হয়েছে অনুষ্ঠান। কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ১২শ জাহাজ ও নৌযান নির্মাণসহ প্রায় ৮শ জাহাজ মেরামত এবং ৫০টি ড্রেজার নির্মাণ করে সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে।