স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে অনড় থাকার মধ্যে বিএনপির অসৎ উদ্দেশ্য আছে। তিনি বলেন, বিএনপিকে দেশের প্রচলিত আইন মেনে সভা-সমাবেশ করতে হবে। তারপরও তারা কেন পল্টনের সমাবেশ করতে চায়, সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখবে।
বুধবার (৭ই ডিসেম্বর) দুপুরে তেজগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠান রাজধানীর নয়াপল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে আরামবাগে ১০ই ডিসেম্বর বিএনপি মহসমাবেশ করার যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে তা নিয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে আতংক ছড়ানো হচ্ছে। মানুষের জানমাল রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে সরকার।
মন্ত্রী আরও বলেন, তারা নাকি ২০-২৫ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটাবে। আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন ২০-২৫ লাখ লোক যদি হয় কোথায় এরা বসাবে। এমন কোনো জায়গা আছে ঢাকায় তাদের স্থান দেওয়ার ? সেজন্যই আমাদের পুলিশ কমিশনার বলেছেন যেখানে বড় বড় সমাবেশ-মিটিং হয় যেখানে আওয়ামী লীগও সমাবেশ করে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলও করে সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কথা। সেখানে অনেক সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানও হয়। সেখানে এ ধরনের লোকসংখ্যা হলেও কোনো অসুবিধা হবে না। তারা কেন আসছে না এটা তাদের ব্যাপার, আমাদের কিছু জানা নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারপর তারা বলছে ওই স্থান বাদ দিয়ে অন্য কোনো স্থানে। পুলিশ কমিশনার বলেছেন রাস্তা ছাড়া কোনো বড় জায়গায় যদি হয় তাহলে তারা ব্যবস্থা নেবে।
অনুমতি না নিয়ে পল্টনেই সমাবেশ করতে চাইলে সরকার কী পদক্ষেপ নেবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যান চলাচল বন্ধ করলে তারও একটি আইন রয়েছে।
সরকার আইন প্রতিষ্ঠা করতে ও আইন সমুন্নত রাখার জন্য যা প্রয়োজন তাই করবে। এখানে আমাদের কথা হচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। দেশের জানমাল রক্ষা করতে হবে। দেশে কেউ যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করতে চায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর যে অর্পিত দায়িত্ব সেটা তারা পালন করবে।
নয়াপল্টনে সরকার সমাবেশ করতে দেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেখানে দলের কার্যালয়ের সামনে তারা সবসময়ই তাৎক্ষণিক কিছু করে থাকে। তারা এ সমাবেশে বলছে ২৫ লাখ লোক আনবে। আমি সেই কারণে বলছি এ সমাবেশ করলে সমস্ত ঢাকা শহরের কী অবস্থা হবে সেটা আপনারা নিজেরাও জানেন। সেজন্যই তাদের একটা ভালো জায়গা দিয়ে আসছি।
সেখানে ছাত্রলীগের সম্মেলন ছিল, ছাত্রলীগের সম্মেলন আমরা অনুরোধ করে এগিয়ে নিয়ে এসেছি এবং তাদের জন্য (বিএনপি) উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আমার মনে হয় এটা কোনো যুক্তি নয় যে সেখানে ছাড়া তারা নয়াপল্টনেই যাবে।
মানবাধিকারের প্রশ্নে ১৫ দেশের রাষ্ট্রদূতের দেওয়া বিবৃতির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে একটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রয়েছে। মানবাধিকার কমিশন এবং আমাদের মানবাধিকার সমন্বিত রাখার জন্য আমাদের সরকার যতখানি সচেষ্ট আমি মনে করি পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে আমরা অনেক বেশি সচেষ্ট। মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হোক পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যেমন চায় না আমরাও চাই না। এর চেয়ে বেশি আমার মনে হয় বলার সময় আসেনি।
রিজার্ভ বা দেশের ব্যাংকিং খাতের চলমান অবস্থা নিয়ে যে কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, একটি জিনিস সবসময়ই বলি, গুজব কিংবা কে কী বলল এ নিয়ে কান দেবেন না। সত্যিকার তথ্যটা জানতে চেষ্টা করুন। সত্যিকার তথ্যটা জানলেই আপনার কাছে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। তখন আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কী লেখা হলো না হলো তা সত্য কি না যাচাই করবেন। সত্য তথ্য জানার চেষ্টা করবেন।