সরকারের নেওয়া বেশকিছু পদক্ষেপের ফলে ২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ১১ লাখ ১৩ হাজার ৩৭৪ কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (বুধবার) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। বুধবারের প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের নেয়া বেশকিছু পদক্ষেপের ফলে ২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ১১ লক্ষ ১৩ হাজার ৩৭৪ কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৪৬৬ জন। এছাড়াও, সরকারী রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লি. (বোয়েসেল)-এর মাধ্যমে ২০২২ সালে ৬১৫ জন পেশাজীবী এবং ১৭ হাজার ৯৭৮ জন দক্ষ কর্মীসহ মোট ১৮ হাজার ৫৯৩ জন কর্মী বৈদেশিক কর্মসংস্থান লাভ করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ১৬৮ টি দেশে শ্রমশক্তি রপ্তানি করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক শ্রম বাজার নির্ভরতা কমাতে চায়। সেজন্য পূর্বইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার নতুন কিছু দেশে শ্রমিক রপ্তানি চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী প্রতি উপজেলা থেকে গড়ে বছরে এক হাজার কর্মী পাঠানোর জন্য একটি কর্মপরিকল্পণা নেয়া হয়েছে।
এসময় জাতীয় পার্টির এমপি রুস্তম আলী ফরাজীর আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ার জন্য সরকার নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে অধিক কর্মী পাঠান, বৈধভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠান অন্যতম। আর বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার ২০১৯ সালের পহেলা জুলাই থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। সরকার ইতোমধ্যে প্রণোদনার বিষয়টি ২ শতাংশ থেকে ২.৫ শতাংশে এ উন্নীত করেছে। সরকারের এ সব পদক্ষেপের ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি উচ্চ রেমিটেন্স প্রাপ্ত দেশ। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির পরও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২৪.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রাপ্ত রেমিটেন্স ২১.০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া, ২০২২-২৩ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে প্রায় ১০ হাজার ৪৯৩.২৬ মিলিয়ন (১০.৪৯২বি.) ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে রেমিট্যান্সের কোনো বিকল্প নেই এবং তা আনতে হবে বৈধ পথে। নতুন শ্রম বাজার অনুসদ্ধান, বিদ্যমান বাজার সংহত করা এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় দেশসমুহের সরকার ও ব্যবসায়ি সংগঠনের সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলো আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
বেনজির আহমেদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপন্ন হতো ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন তা ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে ৭০ টির বেশী দেশে সবজি ও ফল রপ্তানী হচ্ছে এবং কৃষি পণ্য রপ্তানীতে আমরা ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছি।
তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ বিশে^ চাল উৎপাদনে ৩য় স্থানে, সবজি ও পেয়াজে ৩য় স্থান। পাট উৎপাদনে ২য় , চা উৎপাদনে ৪র্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম স্থানে উন্নীত হয়েছে।