প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গি সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি বিএনপি-জামাতের নৈরাজ্য প্রতিরোধে আনসার বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে আনসার বাহিনীর বড় ভূমিকা ছিল। এ ছাড়া বিএনপির জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় আনসার বাহিনী কাজ করেছে।’
রোববার (১২ই ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরে সফিপুর আনসার একাডেমিতে বাহিনীর ৪৩তম জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনসার বাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। মহান মুক্তিযুদ্ধে আনসার বাহিনীর বড় ভূমিকা ছিল। তারা তাদের অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। অনেক আনসার সদস্যই স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছেন। দেশের কল্যাণে নানানভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই বাহিনীর সদস্যরা।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকার কাজ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাতে আনসার বাহিনী চলতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বাহিনীকেই সহায়তা দিচ্ছে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কাজেই কোন বাহিনীর কী প্রয়োজন, সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। সেটা উপলব্ধি করতে পারি বলেই আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে কাজ করা হচ্ছে। আরও উন্নত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে এ দেশ আমরা স্বাধীন করেছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তাছাড়া দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, সেই লক্ষ্যে আমরা গৃহহীনদের ঘর করে দিচ্ছি। সেইসঙ্গে আনসার, ভিডিপির অনেক সদস্যকেও আমরা ঘর করে দিয়েছি। আমরা চাই, এ দেশের সব মানুষ যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। পরের কাছে যেন হাত পেতে চলতে না হয়।
তিনি বলেন, করোনা অতিমারি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ সৃষ্টি করেছে। সেইসঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে শুধু আমাদের দেশ না, সারা বিশ্বেই অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। কিন্তু এ সমস্যা থেকে আমাদের নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে হবে। তাই আমি আহ্বান করেছি, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।
তিনি আরও বলেন, সব অনাবাদি জমি আবাদ করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, আমাদের আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। গ্রামের লোকজনকে শেখানো, তাদেরকে দিয়ে কাজ করানো, ফসল উৎপাদন ও সংরক্ষণ করার বিষয়ে আপনারা অবদান রাখতে পারেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না। এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা তথ্য প্রযুক্তির যে পদক্ষেপ নিয়েছি, তাতে এই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি; স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি; দেশে মেট্রোরেল চালু হয়েছে; পাতাল রেল চালু হবে; কর্ণফুলি নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল করে দিচ্ছি; নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছি। প্রতিটি স্থাপানায় নিরাপত্তার সঙ্গে আনসার বাহিনী জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামেও আপনারা কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য আপনাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।