আজ শুক্রবার (৩ মার্চ) বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদকূলের প্রতি গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা এই দিবসের মূল লক্ষ্য। ২০১৪ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

২০১৩ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে আন্তর্জাতিক বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদের বাণিজ্য সম্মেলনে তেসরা মার্চকে, বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানানো হয়। বর্তমান সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিবার একটা প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘সকলের অংশগ্রহণ বন্যপ্রাণী হবে সংরক্ষণ’।

এ উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। দিবসটি ছুটির দিন শুক্রবার পড়ায় আগামী ৫ই মার্চ অফিসের খোলা দিনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়েরর উদ্যোগে ঢাকার আগারগাঁওয়ের বন ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের উপস্থিত থাকবেন।

ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বে এখন পর্যন্ত বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমেছে দুই-তৃতীয়াংশ। এই সময়ে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ড থেকে হারিয়ে গেছে ৩১ প্রজাতির প্রাণী। এছাড়াও দেশে অন্তত ২১৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিপন্ন। এই তালিকায় আছে উভচর সরীসৃপ ও পাখি ছাড়াও স্তন্যপায়ী প্রাণী। বন বিভাগের এক হিসেবে ৪২ প্রজাতির উভচরের মধ্যে বর্তমানে ৮টি, ১৫৮টি প্রজাতির সরীসৃপের মধ্যে ৬৩টি, ৭৩৬টি প্রজাতির পাখির মধ্যে ৪৭টি, ১২৪টি স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে ৪৩টির অস্তিত্ব হুমকির মুখে আছে।

এরই মধ্যে সুন্দরবনে গত ১৯ বছরে ৩১ বার আগুন লাগায় পুড়ে গেছে প্রায় ১০০ একর বনভূমি। এসব অগ্নিকাণ্ডে একরের পর একর বনভূমির গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়েছে। মারা গেছে বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু। পাশাপাশি আবাসস্থল হারিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী।

সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত বিবরণীতে, বন্যপ্রাণীদের অপরিহার্য মূল্য ও বিভিন্ন অবদানের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এতে পরিবেশগত, জিনতাত্ত্বিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষা বিষয়ক, সাংস্কৃতিক, বিনোদনমূলক এবং নান্দনিক বিষয়ের সাথে যুগসই উন্নয়ন ও মানব কল্যাণের দিকে গুরুত্বারোপ করা হয়।

বাংলাদেশে পাচারের ক্ষেত্রে সব ধরনের বন্যপ্রাণী থাকে টার্গেটে। বন্যপ্রাণী উদ্ধার অভিযান প্রক্রিয়ার সঙ্গে মামলা জরিমানাও করে বন বিভাগ। কিন্তু কোনোভাবে বন্যপ্রাণী পাচার সিন্ডিকেটকে দমানো যাচ্ছে না। তবে শুধু বুঝে নয়, সচেতনতার অভাবেও এসব অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বন বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।